ইম্ফল : নতুন করে অশান্তির আগুন ছড়িয়েছে মণিপুরে। একাধিক জনপ্রতিনিধির বাড়িতে হামলার ঘটনার পর, নিজের বাড়িতে চরম নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগ নিলেন রাজ্যের এক মন্ত্রী। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে নিজের বাড়ি ঘিরে ফেলেন ক্যাবিনেট মন্ত্রী লেসাঙ্গথেম সুসিনদ্রো মেইতি। এর পাশাপাশি তিনি বাড়িতে একটি বাঙ্কারও বানিয়েছেন। খুরাইয়ের বিজেপি বিধায়ক মেইতি।


গত বছর ৩ মে শুরু হওয়া মেইতি ও কুকি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষে ২০০-র বেশি মানুষের মৃত্যু দেখেছে মণিপুর এবং বাসস্থানচ্যুত হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার লোক। গত সপ্তাহ থেকে নতুন করে অশান্তির আগুন ছড়িয়েছে। সাম্প্রতিক হত্যার প্রতিবাদে প্রতিবাদীরা শনিবার একাধিক মন্ত্রী-বিধায়কের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেয়। এমনকী বিক্ষুব্ধ জনতা মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের ব্যক্তিগত বাড়িতেও ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে।


বেশ কিছু দিন ধরেই উত্তপ্ত মণিপুরের জিরিবাম জেলা। নতুন করে গোলাগুলি বর্ষণ, খুন, অগ্নিসংযোগের ঘটনা সামনে এসেছে সেখান থেকে। সেই আবহেই দিনকয়েক আগে ক্রাণশিবির থেকে মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণ করা হয়। ওই ছ'জনেরই দেহ উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার রাতে সীমান্ত সংলগ্ন অসমের শিলচরের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয় দেহগুলি। (Manipur Violence)


৮ মাসের এক শিশু-সহ ৬ জন নিখোঁজের দেহ নদী থেকে উদ্ধার হয়। তার এক দিন পরেই ক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে কুকি সম্প্রদায়ের সশস্ত্র ১০ জন মারা যায়। সোমবারের সেই ঘটনার পর ৬ জন নিখোঁজ হয়ে যান। প্রসঙ্গত, তার আগে জিরিবাম জেলায় কুকি আদিবাসী সম্প্রদায়ের হামার গোষ্ঠীর বছর ৩১-এর এক মহিলাকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়। সেই ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ওঠে। সরকারের তরফে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি, এই অভিযোগ তুলে ক্ষোভ ছড়ায়। ইম্ফলে জমায়েত করে বিক্ষুব্ধরা নিজেদের দাবিতে সরব হন। 


৬ জনের দেহ উদ্ধারের ঘটনার প্রতিবাদে শুরুতেই, বিক্ষুব্ধরা, অন্তত রাজ্যের তিন মন্ত্রী এবং ছয় বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালায়। যার জেরে রাজ্যের ৫ জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিধি-নিষেধ আরোপ করে সরকার। রাজ্যে আংশিকভাবে ইন্টারনেট পরিষেবাও সাসপেন্ড করা হয়। 


জিরিবামে ওই ছয় পণবন্দীর মৃত্যুর পর, বিক্ষুব্ধ জনতার দল মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের ব্যক্তিগত বাসভবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে। যাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বিক্ষুব্ধদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় নিরাপত্তাবাহিনী।