নয়াদিল্লি: এক ভিডিও সামনে আসতেই সাড়া পড়ে গিয়েছে চারিদিকে। কিন্তু ভয়াবহতায় বিরতি পড়ার লক্ষণ নেই। সেখান থেকে আরও দুই তরুণীকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা সামনে এল এবার (Manipur Brutality)। যেদিন দুই মহিলাকে নগ্ন করে ঘোরানো এবং যৌন নিগ্রহ করা হয়, ওই দিনই কাংপোকপি জেলায় জনজাতি সম্প্রদায়ের আরও দুই তরুণীকে ধর্ষণের পর খুন করা হয় বলে অভিযোগ (Manipur Violence)।
ওই তরুণীর বয়স যথক্রমে ২১ এবং ২৪ বছর বলে জানা গিয়েছে। কোনুং মামাংয়ে গাড়ি ধোওয়ার কাজ করতেন। গত ৪ মে তাঁদের উপর একটি দল চড়াও হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, নিজেদের কাজে ব্যস্ত ছিলেন ওই দুই তরুণী। সেই সময় পুরুষদের একটি দল সেখানে পৌঁছয়। দু'ই তরুণীকে ধরে একটি ঘরের মধ্যে ঢোকানো হয় এবং ধর্ষণ করা হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দুই তরুণীকে একটি ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। মুখে ঠেসে দেওয়া হয় কাপড়, যাতে চিৎকার বাইরে থেকে শোনা না যায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে পাশবিক অত্যাচার চালানো হয় ওই দুই তরুণীর উপর। এর পর নিথর দেহ দু'টি পাশের একটি কাঠ চেরাই কলের কাছে ফেলে দেওয়া হয়। জামাাকাপড় ছেঁড়, মাথার চুল কাটা এবং রক্তাক্ত অবস্থায় ওই দুই তরুণীর দেহ উদ্ধার হয় বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Manipur Violence: পরপর লুট, অগ্নিসংযোগ! বোনকে বাঁচাতে গিয়ে খুন ভাই! স্পষ্ট পুরনো FIR-এই
সূত্রের খবর, মেয়ে দু'টি ধর্ষণ করা হয় বলেই লজ্জায় বিষয়টি প্রথমে প্রকাশ্যে আনা হয়নি। পরিবারের তরফেই রাখঢাক করা হয়। শেষ পর্যন্ত, গত ১৬ মে দুই নির্যাতিতার মধ্যে একজনের মা সাহস সঞ্চয় করে সাইকুল থানায় জিরো এফআইআর দায়ের করেন। তিনি জানান, প্রথমে ধর্ষণ করা হয় তাঁর মেয়েকে। পরে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়।
পরে ওই এফআইআর পোরোম্পাত থনায় স্থানান্তরিত হয়। তবে আদৌ তদন্ত শুরু হয়েছে কিনা, সে ব্যাপারে ধোঁয়াশা রয়েছে। কারণ পুলিশ-প্রশাসন কারও থেকেই এ ব্যাপারে সদুত্তর মেলেনি। ওই দুই তরুণীর দেহ শেষ পর্যন্ত কোথায় গেল, তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে প্রায় ১০০ থেকে ২০০ জন মিলে পাশবিক অত্যাচার চালায় বলে উল্লেখ রয়েছে এফআইআর-এ। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হননি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মণিপুরের বিভিন্ন থানায় এমন বহু অভিযোগ জমা পড়ে রয়েছে। ধর্ষণ, অপহরণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র লুঠ এমন একাধিক অভিযোগ পেয়েছে পুলিশ। এক এক করে সেই নিয়ে এগনো হচ্ছে বলে খবর। তবে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় মহিলা কমিশনও। গত দু'মাসেরও বেশি সময় ধরে হিংসার আগুনে জ্বলছে মণিপুর। তাতে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ১২৫ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। ঘরছাড়া প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।