মণিপুর: নতুন বছরের প্রথম দিনেও ফের হিংসা মণিপুরে (Manipur)। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে যেখানে সারা দেশে আনন্দ-উৎসব হচ্ছে। সেখানে মণিপুরে ফের হিংসার ঘটনা। গুলিচালনার জেরে সোমবার মণিপুরের থৌবল জেলায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তার জেরে উত্তর-পূর্বের (north East) এই রাজ্যের ৫টি জেলায় কার্ফু জারি করা হয়েছে।


সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, এখনও হামলাকারীদের শনাক্ত করা যায়নি। হঠাৎ এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে হামলাকারীরা, ঘটনাস্থলেই কয়েকজন মারা গিয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বেশ কয়েকজন জখম ব্যক্তি।


হামলার পরে পাল্টা হিংসা ছড়ায়। সূত্রের খবর, বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। পুলিশ সূত্রের খবর, থৌবল, পূর্ব ইম্ফল (Imphal), পশ্চিম ইম্ফল, কাকচিং এবং বিষ্ণুপুর জেলায় কার্ফু জারি করা হয়েছে।


এই ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন মণিপুরের (Manipur Violence) মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ (N Biren Singh)। একটি ভিডিও বার্তায় কড়া নিন্দা করার পাশাপাশি এলাকায় বাসিন্দাদের শান্তি বজায় রাখতে অনুরোধ করেছেন তিনি। এই ঘটনায় যারা দোষী তাদের দ্রুত আইনি প্রক্রিয়ায় শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। সূত্রের খবর, একটি আপৎকালীন মিটিংও ডেকেছেন মণিপুরের মুখ্য়মন্ত্রী।


এর কয়েকদিন আগেই হামলার মুখে পড়েছিল নিরাপত্তা রক্ষীরা। মণিপুরের মোরে-তে নিরাপত্তারক্ষীদের উপর হামলা করেছিল সশস্ত্র হামলাকারীরা। 


গত বছরের প্রায় গোটা সময়জুড়ে সংবাদ শিরোনামে থেকেছে মণিপুর। মেইতেই ও কুকিদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হিংসার ঘটনায় বহু প্রাণ ঝরেছে উত্তর-পূর্বের এই ছোট্ট রাজ্যে। জাতিগত হিংসার ঘটনার খবর ছড়িয়েছে সারা বিশ্বে। প্রায় ২০০ জনের মৃত্য়ুর ঘটনা ঘটেছে। কয়েকশো বাসিন্দা আহত হয়েছেন। মণিপুরের জনসংখ্যার সিংহভাগ মেইতেই গোষ্ঠীর, তাঁরা মূলত উপত্যকা এলাকায় বসবাস করে। অন্যদিকে আদিবাসী কুকি-জো সম্প্রদায়ের লোকজন মূলত পার্বত্য এলাকায় থাকেন। এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই লাগাতার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটছে। শুধু সংঘর্ষই নয়, নারী ও শিশুদের উপর অত্যাচারের, অগ্নি সংযোগ, সম্পত্তি নষ্টের বহু ঘটনাও ঘটেছে। এই হিংসা থামাতে কার্যত নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে মণিপুরের সরকারকে। ঘুম ছুটেছিল কেন্দ্রের সরকারেরও। সেই হিংসার ঘটনা যে আদৌও কমেনি তা ফের একবার প্রমাণ হল। নতুন বছরের প্রথম দিনও বাদ গেল না, ঝরল প্রাণ। 


আরও পড়ুন: এই পোশাক পরলে এবার দরজা বন্ধ পুরী জগন্নাথ মন্দিরে! কী কী বারণ?