ইম্ফল: মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত করার দাবি ঘিরে অগ্নিগর্ভ বিজেপি শাসিত মণিপুর (Manipur Violence)। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোনও রকম জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর এলাকা-সহ বিভিন্ন এলাকায়। জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। আইন অমান্যকারীদের শ্যুট অ্যাট সাইট, অর্থাৎ দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল টি রঞ্জিত সিংহ (Shoot and Sigh Order)।
রাজ্যপালের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে আইন অমান্যকারীদের দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, হুঁশিয়ারি, কারণ দেখিয়ে কাজ না হলে, গায়ের জোরেও দমানো না গেলে, গুলি ছোড়া যাবে (Manipur News)।
ছাত্র সংগঠন All Tribal Students' Union of Manipur (ATSUM)-এর 'জনজাতি সংহতি মিছিল' ঘিরে বুধবার অশান্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতেই মিছিল বার করা হয়। গত মাসে এই মর্মে রায় শোনায় মণিপুর হাইকোর্টও। তাকে ঘিরে ক্রমশ তেতে উঠছিল পরিস্থিতি। সংঘাত পরিস্থিত তৈরি হয় উপত্যকার ভবঘুরে মেইতেই সম্প্রদায় এবং রাজ্যের পাহাড়ি এলাকার উপজাতিদের মধ্যে।
বুধবার তাই সংহতি মিছিলকে ঘিরে অশান্তি বাধে। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ থেকে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে ধীরে ধীরে। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনাও সামনে এসেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেত নামানো হয়েছে RAF. কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে ভিড় ছত্রখান করার প্রচেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু যত সময় এগিয়েছে, পরিস্থিতি ক্রমশ হিংসাত্মক আকার ধারণ করেছে।
এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোটা রাজ্যে ৫ দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। উপজাতি এবং উপজাতিভুক্ত সম্প্রদায় নয় এমন জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত আট জেলায় জারি করা হয়েছে কার্ফু। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয়েছে সেনা। অশান্ত এলাকা থেকে সাধারণ মানুষদের সরানো হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সেনা নামিয়ে ৭৫০০ মানুষকে সরানো হয়েছে।
রাজ্য জুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অসম রাইফেলস, সেনাবাহিনী। রাজ্য পুলিশও কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলেছে চারিদিক। বুধবার রাতে বেশ কয়েক জনকে এই হিংসার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। মণিপুরের পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তিনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বার্তা দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শাহ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।