ইম্ফল: মণিপুরে ( Manipur Violence ) দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরানোর ঘটনার ভাইরাল ভিডিও নিয়ে উত্তাল দেশ। মাথা হেঁট উপমহাদেশের ( India ) । সারাদেশের সাধারণ মানুষ থেকে রাজনীতিকরা কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এই ঘটনায়। অবশেষে সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, এই ঘটনায় আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত খুইরুম হেরাদাসকে আগেই থৌবাল জেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এখনও পর্যন্ত মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মণিপুর পুলিশ টুইটে জানিয়েছে। মণিপুর পুলিশ সূত্রে খবর, তাপা দিকে দিকে অভিযান চালাচ্ছে , অন্যান্য অপরাধীদেরকে যাতে তাড়াতাড়ি গ্রেফতার করা যায়, তার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
সে-রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় নাকা চেকিং পয়েন্ট করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী যৌথভাবে তল্লাসি চালাচ্ছে। মণিপুরের বিভিন্ন জেলায় মোট ১২৯ টি নাকা এবং চেকপয়েন্ট করা হয়েছে এবং নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে ৬৫৭ জনকে আটক করা হয়েছে।
মোদির বার্তা
৮৪ দিন ধরে চলা রক্তক্ষয়ী অশান্তি, প্রায় দেড়শো মানুষের মৃত্যু, ৮০০-র বেশি জখম, ২৯০টির বেশি গ্রামের সাড়ে ৪ হাজারের বেশি ঘর-বাড়ি তছনছ। অশান্তির আগুনে প্রায় তিন মাস ধরে জ্বলছে মণিপুর। দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হওয়ার পর বৃহস্পতিবারই প্রথম মুখ খোলেন নরেন্দ্র মোদি। সোশাল মিডিয়ায়, মণিপুরে গণধর্ষণের পর, দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানোর এক ভয়ঙ্কর ভিডিও উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের ট্য়ুইটার হ্য়ান্ডেলে প্রকাশ পাওয়ার পর্যন্ত মুখ খোলেন তিনি। সংসদে অধিবেশনের আগে সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খোলেন। মণিপুরের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে চুপ না থেকে বৃহস্পতিবার সরকারের উদ্দেশে কার্যত হুঁশিয়ারি দেয় সুপ্রিম কোর্ট এরপর অবশেষে জ্বলন্ত মণিপুর নিয়ে নীরবতা ভাঙেন নরেন্দ্র মোদি। বলেন, "মণিপুরের ঘটনা ১৪০ কোটি ভারতীয়কে লজ্জায় ফেলেছে। আমি ভারতের জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই যে অভিযুক্তদের রেহাই দেওয়া হবে না।" তিনি সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের তাঁদের নিজ নিজ রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার জন্য বলেন। বিশেষ করে মহিলাদের সুরক্ষা এবং সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ (Chief Minister N Biren Singh ) জানিয়েছেন, এই ঘটনায় সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে । সরকার অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের দিকটিও বিবেচনা করছে।ট্যুইটে তিনি জানান, গতকাল যে মর্মান্তিক ভিডিওটি সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে , দুই মহিলা চূড়ান্ত অসম্মান এবং অমানবিক ঘটনার শিকার হয়েছে। ঘটনাটি হৃদয় বিদারক। ভিডিওটি প্রকাশের পরই পুলিশ ছুটে গিয়েছে। তাঁরা দ্রুত অ্যাকশন নিয়েছে। তিনি আরও জানান, বর্তমানে ঘটনাটির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চলছে । তিনি আশ্বাস দেন, মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। সব অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, আমাদের সমাজে এই ধরনের জঘন্য অপরাধের কোনও জায়গা নেই।
ইতিমধ্যেই, সরেজমিনে মণিপুরের পরিস্থিতি দেখে গেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সড়কপথে তাঁকে যেতে দেয়নি পুলিশ। পরে হেলিকপ্টারে করে ত্রাণশিবির পরিদর্শন করেন তিনি।