নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে, বিজেপির বিরুদ্ধে বারবার এমনই অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। এবার সেই অভিযোগ নিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি পাঠিয়েছেন বিরোধীরা। 


৯টি বিরোধী দল একসঙ্গে চিঠি পাঠিয়েছে নরেন্দ্র মোদিকে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে বিরোধীদের নিশানা করার জন্য বারবার ব্যবহার করছে এমনই অভিযোগ করা হয়েছে ওই চিঠিতে। ওই চিঠিতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার প্রসঙ্গও তোলা হয়েছে। পাশাপাশি এটাও অভিযোগ করা হয়েছে যে বিরোধী দল থেকে যে যে নেতা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তাঁদেক বিরুদ্ধে তদন্তের গতি কমে আসছে। 


কোন কোন দলের চিঠি:
ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতির চন্দ্রশেখর রাও, JKNC-এর প্রধান ফারুখ আবদুল্লা, তৃণমূলের তরফে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, NCP-প্রধান শরদ পওয়ার, উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরের তরফে উদ্ধব ঠাকরে, আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ও আপ নেতা ভগবন্ত মান, তেজস্বী যাদব. সপা নেতা অখিলেশ যাদব। এই নটি দলের তরফে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই তালিকায় নেই কংগ্রেস। 


চিঠিতে লেখা হয়েছে যে, আমরা আশা করি যে আপনিও এটা মানবে যে  ভারত এখনও একটি গণতান্ত্রিক দেশ। কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে এভাবে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার ফলে এটা মনে হচ্ছে যে ভারত ক্রমশ গণতান্ত্রিক দেশ থেকে একনায়কতন্ত্রের দিকে এগোচ্ছে।' সম্প্রতি একটি অভিযোগে দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। চিঠিতে সেই প্রসঙ্গ তুলে দাবি করা হয়েছে কোনওরকম প্রমাণ ছাড়াই মণীশ সিসোদিয়াকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। 


চিঠিতে হিমন্ত প্রসঙ্গ:
ওই চিঠিতে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার প্রসঙ্গও তোলা হয়েছে। তোলা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গও। চিঠিতে লেখা হয়েছে যে, কংগ্রেসে থাকার সময় ২০১৪ সালে সিবিআই ও ইডি হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে গ্রেফতার করেছিল। সারদা চিটফান্ডেও নাম জড়িয়েছিল। কিন্তু হিমন্ত বিশ্বশর্মা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে সেই তদন্ত আর এগোয়নি। একই ভাবে নারদা কাণ্ডেও শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তদন্ত করছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি। কিন্ত বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে আর কিছু হয়নি বলে অভিযোগ বিরোধীদের।


রাজ্যপাল-রাজ্য বিরোধ:
চিঠিতে উঠে এসেছে রাজ্য-রাজ্যপালের বিরোধ প্রসঙ্গও। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে রাজভবনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরোধ হচ্ছে। রাজ্য প্রশাসনের কাজে বাধা দিচ্ছে রাজভবন। তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা- নানা রাজ্যের উদাহরণ দেওয়া হয়েছে চিঠিতে। এমন ঘটনায় রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বলে দাবি করা হয়েছে ওই চিঠিতে।  


বিজেপি বিরোধিতার জন্য বারবার সব বিরোধীদের একমঞ্চে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে কংগ্রেসের তরফে। কিন্তু এই চিঠিতে কংগ্রেসের কারও সই নেই। সম্প্রতি সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফল বেরনোর পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে বিজেপির বিরুদ্ধে তিনি একাই লড়বেন, কারও সঙ্গে যোগ দেবেন না। তাহলে বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে কোনও মঞ্চ তৈরির চেষ্টা চলছে?

আরও পড়ুন: OIC-তে কাশ্মীর ইস্যু তুলল তুরস্ক! বিপুল সাহায্যের এই প্রতিদান?