নয়াদিল্লি: হিংসার আগুনে ছারখার দেশ। রাজনীতি থেকে সমাজজীবন, টালামাটাল পরিস্থিতি। এমন অবস্থায় সকলে যখন গা বাঁচিয়ে চলছেন, সেই সময় খোলাখুলি নিজের মতামত জানালেন অভিনেত্রী মনীষা কৈরালা। বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালানোর তীব্র নিন্দা করলেন অভিনেত্রী।  সাফ জানালেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা মানুষের উপর গুলিবৃষ্টি কাম্য নয়।  (Nepal Gen Z Protests)

সোমবার আন্দোলন চলাকালীন একদল বিক্ষোভকারী পার্লামেন্ট কমপ্লেক্সে ঢোকার চেষ্টা করেন। ব্যারিকেড ভেঙে এগোতেই পুলিশ তাঁদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে যখন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি, সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুললেন মনীষা। রক্তমাখা একটি জুতোর ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘আজ নেপালের ইতিহাসে একটি কালো দিন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে, ন্যায়ের দাবিতে সরব হওয়া মানুষকে গুলি ছুড়ে জবাব দেওয়া হল’। (Manisha Koirala)

পেশায় অভিনেত্রী হলেও, মনীষা নিজে নেপালের রাজনৈতিক পরিবারের মেয়ে। তাঁর দাদু বিশ্বেশ্বর প্রসাদ নেপালের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। বাবা প্রকাশ কৈরালা ছিলেন দেশের মন্ত্রী। 

দুর্নীতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে ফুঁসছে নেপালের তরুণ প্রজন্ম। সেই আবহে সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত আগুনে ঘি ঢালে। এর দরুণ সোমবার সেখানে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কখন যে হিংসাত্মক আকার ধারণ করল, তা বুঝে ওঠার আগেই, ছারখার হয়ে যায় চারিদিক। চলে যায় ১৯টি প্রাণ। আহত হন প্রায় ৪০০ মানুষ। 

ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, X, YouTube-এর মতো ২৬টি সোশ্য়াল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করাতেই এই আন্দোলন মাথাচাড়া দেয় বলে দাবি উঠলেও, ৩০ অনূর্ধ্ব আন্দোলনকারীদের দাবি, শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য় প্রাণ হাতে করে রাস্তায় নামেননি তাঁরা। সরকারের দুর্নীতি, পরিবারতন্ত্রের বাড়বাড়ন্ত, শাসনকার্য নিয়ে সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীতা সইতে সইতে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে তাঁদের। 

আন্দোলনকারীদের বয়স মোটামুটি ৩০-এর নীচে বলে নেপালের এই আন্দোলনকে Gen-Z আন্দোলনও বলা হচ্ছে। স্কুলের ইউনিফর্ম, কলেজের ব্যাগদ কাঁধে নিয়েও রাস্তায় নামেন হাজার হাজার ছেলেমেয়ে। আন্দোলনকারীরা যদিও কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করেননি, তবে এই আন্দোলনের নেপথ্যে ‘Hami Nepal’ নামের একটি যুব সংগঠনের ভূমিকার কথা উঠে আসছে। ২০১৫ সালে ওই অলাভজনক সংগঠনের প্রতিষ্ঠা হয়। কাঠমান্ডুর মেয়র বলেন্দ্র শাহও পাশে রয়েছেন আন্দোলনকারীদের। তিনি নির্দল রাজনীতিক। সোশ্য়াল মিডিয়ায় প্রচার চালিয়েই মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন।  মঙ্গলবার শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কেপি শর্মা ওলি।