নয়াদিল্লি: পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হল দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের। দিল্লির নিগমবোধ ঘাটে অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হল তাঁর। সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্ত্রী, কন্যা এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা। শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়, বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, কংগ্রেসের সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী, মল্লিকার্জুন খড়গে-সহ কংগ্রেস নেতৃত্ব। নিগমবোধ ঘাটে ভিড় জমিয়েছেন শত শত মানুষও। সেখানে গান স্যালুটে বিদায় জানানো হয় মনমোহনকে। মনমোহনের শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন দেশের তিন বাহিনীর প্রধানও। (Manmohan Singh Funeral)
দিল্লির বাসভবন থেকে কংগ্রেসের সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয় মনমোহনের মরদেহ। সেখান থেকে সকালে দিল্লির নিগমবোধ ঘাটে আনা হয়। মনমোহনের শেষকৃত্যের জন্য কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। শেষযাত্রায় মনমোহনকে দেখতে রাস্তায় ভিড় জমিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি অনেকেই। স্লোগান ওঠে, 'মনমোহন সিংহ অমর রহে', 'জব তক সূরজ-চাঁদ রহেগা, মনমোহন সিংহ ইয়াদ রহেগা।' (Manmohan Singh Last Rites)
এদিন নিগমবোধ ঘাটে যখন এসে পৌঁছয় মনমোহনের মরদেহ, সাদা ফুলের চাদরে মোড়া ছিল কফিন। এর পর একে একে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেন সকলে। জাতীয় পতাকায় মোড়া হয় মনমোহনের মরদেহ। এদিন সেখানে মনমোহনের দেহ কাঁধে নেন রাহুল। অন্ত্যোষ্টিক্রিয়াতেও উপস্থিত ছিলেন তিনি।
এদিন নিগমবোধ ঘাটে মনমোহনকে শ্রদ্ধা জানান সকলকে। পুষ্প নিবেদন করেন একে একে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পড়শি দেশ ভুটানের রাজাও। এর পর ২১টি গান স্যালুট দেওয়া হয়। আচারানুষ্ঠান মেনে সম্পন্ন হয় তাঁর অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া। বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিরা মনমোহনকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন বিগমবোধ ঘাটে।
২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন। একের পর এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। দেশের অর্থনৈতিক উদারীকরণের জন্য মূলত তাঁর ভূয়সী প্রশংসা পান। কিন্তু মনমোহনের জীবনশৈলীও রীতিমতো শিক্ষনীয়। কখনও তাঁকে রেগে যেতে দেখেননি কেউ। নিজে আক্রমণের শিকার হলেও কাউকে পাল্টা আক্রমণ করেননি। বিরোধীরা 'মৌনমোহন' বলে কটাক্ষ করলেও, তিনি নীরবে নিজের কাজ করে গিয়েছেন। এ বছরের গোড়াতেই মনমোহনের সাংসদ জীবনে ইতি পড়ে। ৯২ বছর বয়সে ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন তিনি।