লন্ডন: ট্রেনে উঠে পর পর যাত্রীদের কোপ। লন্ডনমুখী ট্রেনে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটল। ছুরির কোপে ১০ জন যাত্রীর আহত হয়ে হাসপাতালে। এর মধ্যে ন’জনের অবস্থা সঙ্কটজনক বলে জানা যাচ্ছে। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তাঁরা। সন্দেহভাজন দুই হামলাকারীকে গ্রেফতার করেছে ব্রিটেনের পুলিশ। (UK Stabbing Case)

Continues below advertisement

ব্রিটেনের কেমব্রিজশায়ারের হান্টিংটন শহরে, স্থানীয় সময় অনুযায়ী, শনিবার সন্ধে সওয়া ৬টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটেছে। ডনক্যাস্টার থেকে লন্ডনে কিংস ক্রস যাচ্ছিল ট্রেনটি। ওই রুটে সারাক্ষণই ঠাসা ভিড় থাকে ট্রেনে। সেই সময়ই ছুরি নিয়ে এলোপাথাড়ি যাত্রীদের কোপানো হয় বলে অভিযোগ। (Stabbing on London Bound Train)

প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, বড় ছুরি হাতে এক যুবক হাজির হয়। এর পর চারিদিকে শুধু রক্ত আর রক্ত। আতঙ্কে যাত্রীদের কেউ কেউ শৌচাগারে ঢুকে যান। হুড়োহুড়িতে পরস্পরকে মাড়িয়ে ছুটে যান অনেকে। বাঁচবেন না ভেবে সঙ্গের মানুষকে ‘I Love You’ বলতেও শোনা যায়।

Continues below advertisement

আর এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, এক ব্যক্তিকে কোপ মারা হয়। জখম অবস্থায় কোনও রকমে শরীরটাকে ঘষটে টেনে নিয়ে যান তিনি। ছুরি হাতে দুষ্কৃতী তাণ্ডব চালাচ্ছে বলে তিনি সতর্ক করেন বাকিদের। প্রথমে হ্যালোউইন উপলক্ষে কেউ রসিকতা করছে বলে মনে করেন সকলে। ভুল ভাঙে রক্ত দেখে। আর তাতেই পালাও পালাও রব ওঠে। 

লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ড কর্মী ডিন ম্যাকফার্লেন জানিয়েছেন, রক্তাক্ত অবস্থায় এক যাত্রীকে নিয়ে ট্রেনটি এসে থামে। আর সঙ্গে সঙ্গে হুড়মুড়িয়ে নামতে শুরু করেন যাত্রীরা। প্ল্যাটফর্মের উপর দিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ছুটছিলেন অনেকে। সাদা শার্ট পরিহিত একজন রক্তে পুরো ভিজে গিয়েছিলেন। প্যানিক অ্যাটাকও হয় অনেকের।

এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে সন্ত্রাসদমন শাখা। ব্রিটিশ পরিবহণ দফতরের পুলিশ প্রধান ক্রিস কেসি বলেন, “আমরা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছি। কিছু নিশ্চিত ভাবে বলতে সময় লাগতে পারে। এখনই কারণ বলা সম্ভব নয়।” ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি আহতদের পরিবারকে আশ্বস্ত করেছেন তিনি। সাধারণ মানুষকে পুলিশের নির্দেশ অনুযায়ী চলতে আবেদন জানিয়েছেন। যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি এখনও পর্যন্ত।

২০১১ সাল থেকে ব্রিটেনে ছুরি নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে। ব্রিটেনে আগ্নেয়াস্ত্র আইন বেশ কড়া। কিন্তু যে হারে ছুরি নিয়ে হামলার ঘটনা বাড়ছে, তাতে দেশে ‘জাতীয় সঙ্কট’ দেখা দিয়েছে বলে মত প্রধানমন্ত্রী স্টার্মারের। এখনও পর্যন্ত ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস থেকে তাঁর সরকার প্রায় ৬০ হাজার ধারাল অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে বা সেগুলি তাদের হাতে সমর্পণ করা হয়েছে। ছুরি নিয়ে ঘোরাঘুরিতে সেখানে চার বছরের জেল হতে পারে।