বেঙ্গালুরু: পছন্দের পাত্রপাত্রীকে বিয়ে করার অধিকারকে স্বীকৃতি দিল আদালত। কর্ণাটক হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, কেউ পছন্দের মানুষকে বিয়ে করতেই পারেন, এটা তাঁর মৌলিক অধিকার। লাভ জেহাদ নিয়ে সঙ্ঘ পরিবার, বিজেপির প্রবল আপত্তির মধ্যেই এই রায় দিল আদালত। বেঙ্গালুরুর জনৈক বাসিন্দার পেশ করা হেবিয়াস কর্পাস পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে এই বক্তব্য হাইকোর্টের।
পিটিশনের মীমাংসা করে হাইকোর্টের এক বেঞ্চ বলেছে, এটা সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যাপার যে, যে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির নিজের পছন্দের ছেলে বা মেয়েকে বিয়ের অধিকারকে ভারতের সংবিধান মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাছাড়া দুটি মানুষের ব্যক্তিগত সম্পর্ক সংক্রান্ত স্বাধীনতায়, তাদের জাতপাত বা ধর্ম, যা-ই হোক না কেন, কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। অর্থাত প্রেম-ভালবাসার সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধর্ম বা জাত, ইস্যু হতে পারে না।
গত সপ্তাহেই জনৈক ওয়াজিদ খান কর্নাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে আবেদন করেন, তাঁর প্রেমিকা রামিয়া জি-কে গৃহবন্দি দশা থেকে মুক্তি দেওয়া হোক। ওয়াজিদ পেশায় সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার। রামিয়ারও একই পেশা। ওয়াজিদ যে কোম্পানিতে কাজ করেন, রামিয়া সেখানে তাঁর সহকর্মী।
শুনানির সময় রামিয়াকে বেঞ্চের সামনে হাজির করা হলে বিচারপতি এস সুজাতা ও বিচারপতি সচিন শঙ্কর মাগাদুমের সামনে তিনি দাবি করেন, তাঁর অভিভাবকরা ওয়াজিদের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হোক, চান না, তাঁর ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার খর্ব করছেন তাঁরা। অপরদিকে এই বিয়েতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই বলে জানান ওয়াজিদের মা।
রামিয়া বেঞ্চকে বলেন, জনোদয় স্বান্তনা কেন্দর নামে বিতর্ক নিরসন কমিটির কাছে নালিশ দায়ের করার পর থেকে তিনি একটি এনজিও-তে থাকছেন। ওই কমিটি তৈরি করেছে রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ দপ্তর। রামিয়ার অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
প্রসঙ্গত, অতি সম্প্রতি এলাহাবাদ হাইকোর্ট ও দিল্লি হাইকোর্টও একই ধরনের রায় ঘোষণা করে। এলাহাবাদ হাইকোর্ট বলেছিল, যে ধর্মাচরণই করুন না কেন, একজন ব্যক্তির নিজের পছন্দের কারও সঙ্গে থাকার পূর্ণ অধিকার আছে, এটা জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকারের সঙ্গে মৌলিক ভাবে সংযুক্ত, অবিচ্ছেদ্য।