কলকাতা: কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘণ্টা নয়। টানা চারদিন ধরে যানজট। বিহারে দিল্লি-কলকাতা হাইওয়ের অবস্থা এখন এমনই। অগণিত গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে সারি দিয়ে। এক ইঞ্চিও এদিক ওদিক সরার উপায় নেই। দীর্ঘ সময় ধরে এমন অবস্থা চলায় গাড়ি ফেলে রেখে নেমেও গিয়েছেন বহু চালক। যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের মাথায় হাত। এই পরিস্থিতি থেকে কী ভাবে মুক্তি মিলবে, বুঝে উঠতে পারছেন না। (Delhi-Kolkata Highway Traffic Jam)

Continues below advertisement

কিন্তু এমন অবস্থা হল কেন? জানা যাচ্ছে, গত শুক্রবার ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে বিহারের রোহতাস জেলা। জল জমে যায় হাইওয়ের উপরও। ১৯ নং জাতীয় সড়কের উপর ওই অংশে যে ছয় লেন বিশিষ্ট হাইওয়ে, তার সার্ভিস লেনে, ডিভিশনে জল জমে রয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে দাঁত বেরিয়ে পড়েছে রাস্তার। জায়গায় জায়গায় গর্ত হয়ে গিয়েছে। কোথাও খুবলে উঠে গিয়েছে রাস্তা। (National Highway Authority of India)

শুধু তাই নয়, জলে ভারী গাড়িরও চাকা পিছলে যাচ্ছে। ফলে এমন পরিস্থিতি বুঝেশুনে এগোতে হচ্ছে। এক কিলোমিটার গাড়ির চাকা গড়াতেও লেগে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ঔরঙ্গাবাদ পর্যন্ত আটকে রয়েছে সারি সারি লরি, ট্রাক, গাড়ি। রোহতাস থেকে ঔরঙ্গাবাদের দূরত্ব প্রায় ৬৫ কিলোমিটার। 

Continues below advertisement

এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসনের দিকেও আঙুল উঠছে। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশের তরফে যানজট কাটাতে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার তরফেও কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। যে সংস্থা ওই রাস্তার নির্মাণ করেছিল, কোনও রকম প্রতিক্রিয়া নেই তাদেরও। এক ট্রাক চালক জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ৫ কিলোমিটার রাস্তা পেরোতে পেরেছেন।

প্রবীণ সিংহ নামের ওই ট্রাক চালক সংবাদমাধ্যমে বলেন, “গত ৩০ ঘণ্টায় মাত্র ৭ কিলোমিটার এগোতে পেরেছি আমরা। টোল দিয়ে, কর দিয়ে, অন্যান্য় খরচ চালিয়েও ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে। ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া হোক, স্থানীয় প্রশাসন, কারও কোনও হেলদোল নেই। চোখের সামনে সব দেখেও কিছু করছেন না।”

সঞ্জয় সিংহ নামের আর এক ট্রাক চালক বলেন, “গত দু’দিন ধরে যানজটে আটকে রয়েছি। খিদে পেয়েছে, তেষ্টা পেয়েছে। যাচ্ছেতাই অবস্থা। কয়েক কিলোমিটার এগোতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে।” এই যানজটের দরুণ ব্যবসাও মার খাচ্ছে। ট্রাক, লরিতে বোঝাই রয়েছে খাদ্যসামগ্রী, শাকসবজি। এত দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় সেই সব পচে যাবে, খারাপ হয়ে যাবে বলেও আশঙ্কা।

শুধু ট্রাক বা লরি নয়, চারচাকার গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্স, পর্যটকদের গাড়িও আটকে রয়েছে যানজটে।  ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার প্রজেক্ট ডিরেক্টর রণজিৎ বর্মার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। আসেননি সংবাদমাধ্যমের সামনেও।