নয়া দিল্লি: ব্রিটেনে সফরে রয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সেখান থেকেই বুধবার অভিযোগের তির ছুঁড়েছেন তিনি। ভারতে বসে শেখ হাসিনা যে সব বিবৃতি দিচ্ছেন, তার জেরেই বাংলাদেশে উত্তেজনা বাড়ছে। তাঁর দাবি, আওয়ামী লীগের নেত্রীকে নিরস্ত করা তো দূরের কথা, নরেন্দ্র মোদি সরকার হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে।
লন্ডনের চ্যাথাম হাউসের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সে একটি প্রশ্নোত্তর পর্বে ইউনূস বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে আমার কথা বলার সুযোগ হয়েছিল। তখন বলেছিলাম, শেখ হাসিনাকে ওখানে থাকতে দিয়েছেন। আমি তো আপনাকে নীতি পরিবর্তনে বাধ্য করতে পারি না। দয়া করে এটা নিশ্চিত করুন যাতে, উনি বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ না করেন। উনি বিভিন্ন কর্মসূচির দিনক্ষণ বলেছেন, তাতে বাংলাদেশে উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে। কেন আমাদের দেশে উনি উত্তেজনা তৈরি করছেন!'
তাঁর কথা অনুযায়ী, এরপর মোদি বলেছিলেন, ‘সমাজমাধ্যমে এ সব হচ্ছে। সমাজমাধ্যমকে তো আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না’। আমাদের দেশে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, আর আপনি সমাজমাধ্যম বলে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারেন না।' এমনটাই ওই অনুষ্ঠানে দাবি করেছেন মুহাম্মদ ইউনূস।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি নিয়ে ইউনূস বলেন, "আপাতত দেশের নিরাপত্তা ও রাজনীতির সুরক্ষায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত থাকবে। আমরা দলটিকে নিষিদ্ধ করিনি, কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।"
এমনকী, ভারত কি বাংলাদেশের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করছে কি না এ বিষয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বে জানতে চাইলে ইউনূস দ্বিধাহীনভাবে উত্তর দেন- "না।" তিনি এও বলেন যে, বাংলাদেশ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য ভারত সরকারকে চিঠি লিখেছে এবং আইনি প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই চলছে। ইউনূসের কথায়, 'ট্রাইব্যুনাল বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তারা হাসিনার অপরাধের জন্য তাঁকে নোটিশ পাঠিয়েছে। আরও অনেক অপরাধ সামনে আসছে। তাই তাদের এই ধরনের নোটিশের জবাব দিতে হবে। আমরা একটি আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি। আমরা চাই এটি আইনি হোক, খুবই যথাযথ হোক। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে আমরা রাগের বশে যেন কিছু না করি"।