কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: একসঙ্গে চলার বার্তা। বৈঠকের শেষে লুচি-আলুরদম, চিকেন স্টু, সহযোগে খাবার । এত কিছুর পরেও সাড়ে ১৪ ঘণ্টার মধ্যেই শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে ফের ছন্দপতন। কিন্তু, কী এমন হল? সূত্রের দাবি, রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে নিজের অবস্থান জানাবেন শুভেন্দু । সাড়ে ১৪ ঘণ্টার মধ্যে বদলে গেল ছবিটা!
সূত্রের দাবি, বুধবার সকালে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে হোয়াটসঅ্যাপ করে শুভেন্দু জানিয়ে দিয়েছেন, একসঙ্গে কাজ করা মুশকিল। কিন্তু, রাত গড়িয়ে সকাল হতে হতে কী এমন হল যে হঠাৎই সব বদলে গেল? মঙ্গলবার রাতে ম্যারাথন বৈঠকের পর বুধবার সকালে সৌগত বলেন, অভিষেক, পিকের সঙ্গে সুদীপের বাড়িতে বসেছিলাম। অভিষেক মুখোমুখি দেখা করতে চায়। তারপর শুভেন্দুকে বলি। আস্তে আস্তে রাজি হয়। শনিবার হওয়ার কথা ছিল। মায়ের শরীর খারাপ। মঙ্গলবার আসবে বলে। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কথা হয়। উত্তর কলকাতায় শ্যামপুর স্ট্রিটে এক তৃণমূল নেতার আত্মীয়ের ফ্ল্যাটে ছিল এই হাইভোল্টেজ বৈঠক। সূত্রের খবর, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে পৌঁছন সন্ধে ৬টা নাগাদ। সোয়া ছটায় পৌঁছন সৌগত রায়। এরপর ৬টা ২০ নাগাদ প্রশান্ত কিশোর ও সাড়ে ছটায় পৌঁছন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু পৌঁছন তার আধঘণ্টা পরেই।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতের বৈঠকে শুভেন্দুর মুখোমুখি বসেছিলেন অভিষেক। বৈঠকের শুরুতে প্রথমে কুশল বিনিময় করেন সৌগত। এরপর শুভেন্দু বলেন, যা বলেছি, আপনারা তো সবই জানেন। আমার কোনও ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ নেই। কিন্তু সাংগঠনিক বিষয়ে কিছু বক্তব্য আছে। তখন অভিষেক বলেন, আমার দিক থেকে কোনও ইনটেনশন নেই। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। তখন শুভেন্দু, অভিষেককে উদ্দেশ্য করে প্রশান্ত কিশোর বলে ওঠেন, সবাইকে একসঙ্গে চলতে হবে। তাহলেই তৃণমূলের ফল ভাল হবে। তোমরাই তো ভবিষ্যত। উত্তরে শুভেন্দু বলেন, ঠিক আছে। পিকে পাল্টা বলেন, তোমরা পার্টির কাজে নামো। তাতে কোনও সমস্যা হলে নিজেদের মধ্যে সমাধান করে নেওয়ার কথা বলেন অভিষেক।
বৈঠকের পাশাপাশি লিকার চা-কফি, লুচি, আলুর দম, চিকেন স্টু, রুটি সহযোগে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও ছিল। তবে শুভেন্দু খান হাতে তৈরি রুটি। আজ সকালে সৌগত বলেন, শুভেন্দু তার কথা বলে। অভিষেক সাড়া দেয়। পিকে মাঝে মাঝে কথা বলে। আমাদের ভূমিকা ছিল মধ্যস্থতাকারীর। আস্তে আস্তে ঠিক হয় থাকবে। সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করবে। শুভেন্দু সাংবাদিক বৈঠক করবে, ২-৩ দিনে যখন সুবিধা হবে।

বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের এই বক্তব্য শুনে অনেকেরই মনে হয়েছিল, শেষ অবধি শুভেন্দু-তৃণমূল বোঝাপড়া সম্ভব হয়েছে! সফল হয়েছে সৌগতর মধ্যস্থতা, আজ সকালেও যিনি বলেন, বৈঠক শেষের পর সিএমকে ফোন করে সব বলি। বলি আপনি দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মনে হয় পালন করতে পেরেছি।
কিন্তু, এরপরই নাটকীয় মোড়! সৌগতর ফোনে শুভেন্দুর একটা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ। এই মেসেজের পরই ফের মাথাচাড়া দিল শুভেন্দুর দলবদলের জল্পনা! কীভাবে সব পাল্টে গেল? সৌগত একটা শব্দের ওপর বিশেষ জোর দিলেন বোঝা গেল। তিনি বলেন, বৈঠকের পর যা বলেছি সত্যি কথা। সত্যনিষ্ঠ কথা।তৃণমূলের মঙ্গলের স্বস্তি বুধের সকালেই বদলে গেল অস্বস্তিতে!