উত্তরপ্রদেশ, বরেলি : রাস্তাঘাটে আচমকা পিরিয়ডস হয়ে গেলে মহিলারা ঠিক কতটা সমস্যায় পড়েন তা কেবলমাত্র তাঁরাই বুঝতে সক্ষম। অনেকসময়েই তারিখের এদিক-ওদিক হয়। আর তার ফলে যদি হঠাৎ রাস্তাঘাটে আপনি বুঝতে পারেন পিরিয়ডস হয়ে গিয়েছে, তখন বাথরুম খোঁজা, সেটা পরিষ্কার হবে কিনা তা ভাবা, পরিষ্কার না হলে ইনফেকশনের ভয়, কীভাবে প্যাড চেঞ্জ করবেন- একরাশ দুশ্চিন্তা কয়েক সেকেন্ডেই ভিড় করে মাথায়। তবে পরিচিত জায়গায়, তা সে কর্মক্ষেত্র হোক বা স্কুল-কলেজ সেখানে অসুবিধা হবে না বলেই অনুমান করি আমরা। কিন্তু সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে যা ঘটেছে তা শুধু নিন্দনীয় নয়, অত্যন্ত লজ্জার। একুশ শতকের তথাকথিত সভ্য সমাজে দাঁড়িয়েও মহিলাদের যে এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে, তা ভাবলে শুধুই অবাক লাগবে। 


একাদশ শ্রেণির ছাত্রী পরীক্ষা দিতে স্কুলে গিয়েছিল। পরীক্ষার হলে বসে ছাত্রী বুঝতে পারে তার পিরিয়ডস হয়েছে। স্বভাবতই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকের থেকে একটি প্যাড চেয়েছিল ওই ছাত্রী। আর সেটাই বোধহয় সবচেয়ে বড় অপরাধ হয়ে গিয়েছিল তার। কারণ পড়ুয়াকে ক্লাসরুম থেকে বের করা দেওয়া হয়। পরীক্ষা চলাকালীন ক্লাসের বাইরে ঠায় এক ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। শুনে অবিশ্বাস্য লাগলেও রূঢ় বাস্তব এটাই। এই ঘটনা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। কীভাবে কোনও স্কুলের শিক্ষক ছাত্রীর প্রতি এমন অমানবিক আচরণ করতে পারেন, তাই নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন সকলে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন নেটিজেনদের একাংশ। সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় হল, এই গোটা ঘটনা ঘটেছে একটি মেয়েদের স্কুলে। অর্থাৎ গার্লস স্কুল। সেখানে হঠাৎ পিরিয়ডস হয়ে যাওয়ায় প্রধান শিক্ষকের থেকে প্যাড চেয়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হল এক ছাত্রীকে। 


ঠিক কী ঘটেছে তা জানতে অতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই ছাত্রীর বাবার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই সবটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা শাসক, স্কুলের ডিস্ট্রিক্ট ইনস্পেক্টর, উত্তরপ্রদেশের মহিলা কমিশন এবং নারী কল্যাণ দফতরে অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ছাত্রীর বাবা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ক্ষুব্ধ নেটিজেনরা। কীভাবে কোনও স্কুলে একজন পড়ুয়ার সঙ্গে এ হেন আচরণ করা হতে পেরে, তা ভেবেই অবাক সকলে। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টর অফ স্কুল দেবকী নন্দন আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন, গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে এবং যা তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যাবে তার ভিত্তিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 


আরও পড়ুন- স্নায়ুর বিরল রোগ Guillain Barre Syndrome, এই GBS আসলে কী? কতটা ভয়ঙ্কর?