নয়াদিল্লি: গ্ল্যামার জগতে একবার এসে পড়লে পিছন ফিরে তাকাতে হয় না আর। খ্যাতি, অর্থ আপনাআপনিই এসে পৌঁছয় হাতে। কিন্তু স্বপ্নের জগতে প্রবেশ করেও মুখ ফিরিয়ে নিলেন খাতায় কলমে ইংল্যান্ডের অন্যতম সুন্দরী তরুণী। নাম, যশ, অর্থ পেলেও, স্বাধীন ভাবে বাঁচার অধিকার হারাতে বসেছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তাই নিজের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেলেন তিনি। গ্ল্য়ামার দুনিয়া ছেড়ে লরির চালক হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।
সুন্দীর মিলি এভব়্যাট সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়ে প্রথমে মিস লিঙ্কনশায়ার হন। তার পর মিস ইংল্যান্ড প্রতিযোগিতার ফাইনালে পৌঁছে যান। এর পর মডেলিং, অভিনয়ের প্রস্তাবে ঝুলি উপচে পড়ে তাঁর। বেশ কিছুদিন এই নতুন পেশা নিয়েই ছিলেন ২৩ বছরের মিলি। কিন্তু কৃষক পরিবারের মেয়ে গ্ল্যামার জগতে ঠিক মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। নিজের মতো করে জীবনযাপন করতে পারছিলেন না তিনি। তাই সব ছেডে় নিজের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।
ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মিলি কৃষক পরিবারের মেয়ে (Milly Everatt)। নিজেদের খামার রয়েছে তাঁদের। ব্যবসা দেখেন মিলির বাবা। বাড়ির লোকজনকে ছোট থেকে ফসল সরবরাহ করতে দেখেছেন। কিন্তু করোনার সময় সঙ্কট দেখা দেয়। ফসল এবং জিনিপত্র সরবরাহ করতে লরির চালক পাওয়া যাচ্ছিল না। ভেবেচিন্তে গত বছর লরি চালক হতে লাইসেন্সের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন মিলি। Class 1 এবং Class 2 HGV লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন, যার আওতায় ৪৪ টন পণ্যবোঝাই লরি চালানোর ক্ষমতা থাকতে হয়। (Viral News)
আরও পড়ুন: Jesus Christ: বড়দিনে 'নিস্তব্ধ' বেথলেহেম, কেন আঁধারে ঢেকে যিশুর জন্মস্থান?
সম্প্রতি সেই লাইসেন্স হাতে পান মিলি। তার পর আর দ্বিতীয় ভাবনাচিন্তা করেননি তিনি। গ্ল্যামার জগৎকে বিদায় জানিয়ে লরির চালক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তে হতবাক সকলেই। কিন্তু মিলির কথায়, "পুরুষশাসিত ইন্ডাস্ট্রিতে (লরি চালিয়ে পণ্য সরবরাহ) নারী হিসেবে আমার কিছু প্রমাণ করার আছে বলে মনে হয় না। কিন্তু আমি লরির স্টিয়ারিংয়ে হাত রাখলে যদি মহিলাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে, তাহলে উদাহরণ হতে আপত্তি নেই আমার।"
ইংল্যান্ডে লরি চালদের মধ্যে মাত্র ২ শতাংশই মহিলা। বাকিদের উৎসাহ জোগাতে চান মিলি। ২০১৭ সাল থেকে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়ে আসছেন তিনি। ২০১৮ সালে মিস লিঙ্কনশায়ার নির্বাচিত হন। মিস ইংল্যান্ড প্রতিযোগিতায় ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেন, যা কিনা ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা। তার পর মডেলিং এবং অভিনয় জগৎ থেকে ভূরি ভূরি কাজের সুযোগ এলেও, স্বচ্ছন্দ বোধ করছিলেন না তিনি।
কিন্তু সব ছেড়ে মিলির লরির চালক হওয়ার সিদ্ধান্ত অনেকরই মনে খচখচ করছে। তিনি কোনও কাজেই আদৌ টিকতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে। কিন্তু মিলির ট্রেনারের দাবি, স্টিয়ারিং হাতে একেবারে স্বচ্ছন্দ মিলি। মিলি নিজেও জানিয়েছেন, তিনি পরিশ্রম করতে পারেন যথেষ্ট। তা ছাড়া স্টিয়ারিংয়ে হাত দিলে অদ্ভুত এক স্বাধীনতা টের পান। পারিশ্রমিকও বেশ ভাল। মডেলিং বা অভিনয় নয়, লরি চালানোই তাঁর স্বপ্নের পেশা।