নয়া দিল্লি: একসময় আলোর রোশনাইয়ে ধাঁধা লেগে যেত চোখে। পর্যটক, ভক্তদের ভিড়ে গমগম করত গোটা চত্বর। জায়গায় জায়গায় ক্রিসমাস ট্রি, নানা রঙিন সাজে সজ্জিত থাকে রাস্তাঘাট। কিন্তু ২০২৩ এর বড়দিন যেন একেবারে অন্যরকম। বেথলেহেল জুড়ে শুধুই শূন্যতা! 


যিশুর জন্মদিন হিসেবেই বড়দিন পরিচিত। তাই এ দিনটা খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের কাছে আনন্দের। সারাবছর তাঁরা অপেক্ষায় থাকেন দিনটার জন্য। বড়দিনে তাঁরা তো বটেই, তবে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে গোটা বিশ্বই মহানন্দে মেতে ওঠে। ক্রিসমাস ট্রি, আলোর বন্যা, খাওয়াদাওয়া, বেড়ানো, উৎসবে মেতে ওঠা, চুটিয়ে আনন্দ উপভোগ করার মধ্যে দিয়ে বড়দিনটা কাটান বিশ্ববাসী।


তবে যাঁর জন্মদিনকে সামনে রেখে এই উৎসব আয়োজন সেই প্রভু যিশুর জন্মস্থান বেথলেহেম শহরই রইল অন্ধকারে ডুবে। এমন বড়দিন বেথলেহেম কখনও দেখেনি।  দোকানপাট থেকে হোটেল, কোথাও মাথা গোঁজার জায়গা পাওয়া যায়না। চার্চে ভিড় জমে। এখানেই রয়েছে চার্চ অফ নেটিভিটি। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন এটাই সেই স্থান যেখানে প্রভু যিশু জন্মগ্রহণ করেছিলেন।


তাই বড়দিনে সেই জমি স্পর্শ করতে পারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের কাছেই এক অনন্য প্রাপ্তি। তাই সব মিলিয়ে যে বেথলেহেম শহর বড়দিনে মানুষের ঢল আর আনন্দে মেতে থাকে সেখানে এবার মানুষের মুখ পর্যন্ত দেখতে পাওয়া যাচ্ছেনা। চার প্রজন্ম ধরে হোটেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আলেক্সজান্ডার হোটেলের মালিক বলেন, হোটেলে কোনও অতিথিরা নেই। শুধু এখনের জন্য নয়, আগামী একবছরে কোনও বুকিং হয়নি। যা হয়েছিল তা পরপর বাতিল হয়ে গিয়েছে।                              


আরও পড়ুন, এই গ্রামে ভূতের সঙ্গে দেখা করতে যান সকলে! বিশ্বের সবচেয়ে ভুতুড়ে জায়গা এটিই!


তাঁর কথায়, 'সবচেয়ে খারাপ বড়দিন এটিই। বড়দিনে এমন বিষন্ন বেথলেহেম আগে দেখেনি কখনও। ক্রিসমাস ট্রি কোথাও একটাও দেখা যাচ্ছেনা। দোকানপাট অধিকাংশই বন্ধ।' এক নিস্তব্ধ জনহীন শহর হয়েই যেন বড়দিন কাটাল যীশুর জন্মস্থান।


কেন এমন তমসাময়? 


ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে যে প্রবল লড়াই শুরু হয়েছে তার ফল ভোগ করল বেথলেহেম। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের এই ধর্মীয় স্থানে এবার বড়দিনে এলেন না কোনও পর্যটক। এই চরম পরিস্থিতিতে কেউই জীবনের ঝুঁকি নিতে চাইলেন না। তাই এক একাকী শহর হয়ে বড়দিন কাটিয়ে দিল প্যালেস্টাইনের বেথলেহেম শহর।