আইজওয়াল (মিজোরাম) : দেশের সবথেকে সুখী রাজ্য (Happiest State) মিজোরাম (Mizoram)। এক গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। গুরুগ্রামের ম্যানেজমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট-এর (Management Development Institute in Gurugram) কৌশল-বিষয়ক অধ্যাপক রাজেশ কে পিলানিয়া এই গবেষণা পরিচালনা করেন। 


রিপোর্ট অনুযায়ী, এটি দেশের দ্বিতীয় এমন রাজ্য যেখানে ১০০ শতাংশ সাক্ষরতা রয়েছে। কঠিন পরিস্থিতিতেও ছাত্রদের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়।


রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, পারিবারিক সম্পর্ক, কর্ম-সংক্রান্ত বিষয়, সামাজিক বিষয়, মানবপ্রীতি, ধর্ম, করোনার প্রভাব এবং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ছাড়া ছ'টি প্যারামিটারের উপর নির্ভর করে মিজোরামের সুখী রাজ্যে পরিণত হয়েছে।


গবেষণায় বলা হয়েছে, মিজোরামের আইজওয়ালের সরকারি মিজো হাই স্কুলের এক ছাত্রকে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। কারণ, সে যখন ছোট ছিল তখন তার বাবা পরিবার ছেড়ে চলে যান। তা সত্ত্বেও সে আশাবাদী ছিল। পড়াশোনায় উন্নতি করে। সে এখন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট হতে চায়। তা যদি নাও হয় তাহলে সিভিল সার্ভিসের দিকে ঝুঁকতে পারে।


একইভাবে ওই স্কুলের ক্লাস টেনের অপর এক ছাত্র ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে যোগ দিতে চায়। তার বাবা দুধের কারখানায় কাজ করেন। মা গৃববধূ। উভয়েই আজ নিজেদের কেরিয়ার নিয়ে আশাবাদী। কারণ, তাদের স্কুল। এক ছাত্র বলে, "আমাদের শিক্ষকরা আমাদের সবচেয়ে ভাল বন্ধু। আমরা তাঁদের সঙ্গে কোনও কিছু শেয়ার করতে লজ্জিত বা ভীত নই।"


মিজোরামের শিক্ষকরা নিয়মিত ছাত্র এবং তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে দেখা করেন। যদি কোনও সমস্যার বিষয় থাকে তা নিয়ে আলোচনার জন্য। মিজোরামের সামাজিক পরিকাঠামোরও এখানকার যুবকদের সুখী হওয়ার পেছনে অবদান রয়েছে। 


রাজ্যের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা সিস্টার লালরিনমাওই খিয়াংতে বলেন, "কীভাবে একজন শিশুকে মানুষ করছেন তার উপর সে সুখী হবে, না হবে না তা নির্ভর করে। আমাদের এখানকার সমাজে কোনও জাতিভেদ নেই। তাছাড়া পড়াশোনার জন্য বাবা-মায়ের চাপ দেওয়াও এখানে কম। "


রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, মিজো সম্প্রদায়ের প্রত্যেক বাচ্চা, তা সে ছেলেই হোক বা মেয়ে, খুব ছোট থেকেই রোজগার করতে শুরু করে দেয়। এখানে কোনও কাজকেই ছোট মনে করা হয় না। ১৬-১৭ বছর বয়সেই ছেলে-মেয়েরা কাজ পেয়ে যায়। এটাকে উৎসাহও দেওয়া হয়। তাছাড়া ছেলে-মেয়ের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ করা হয় না।