কলকাতা: মোবাইল ফোনটা রোজ স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করেন তো? না করে থাকলে এখনই শুরু করুন। কারণ গবেষকরা বলছেন, করোনা জীবাণু আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ মোবাইলে দিব্যি লুকিয়ে থাকে। তাই দিনে ২ বার করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে মোবাইল ফোনকে।


গবেষণাটি করেছেন অস্ট্রেলিয়ার বন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তা প্রকাশিত হয়েছে ট্র্যাভেল মেডিসিন অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস জার্নালে। ২৪টি দেশের ৫৬টি নথি বিশ্লেষণ করেছেন তাঁরা, দেখেছেন জীবাণু মোবাইল ফোনে স্বচ্ছন্দে লুকিয়ে থাকতে পারে। গবেষকদের বক্তব্য, প্রতিদিন মোবাইল জীবাণুমুক্ত করুন, হয় ৭০ শতাংশ আইসোপ্রোপাইল দিয়ে অথবা ফোনসোপের মত যন্ত্র দিয়ে। তাঁদের বক্তব্য, ফোনে সর্বাধিক থাকে গোল্ডেন স্টাফ ও ই কোলাই জীবাণু। তাঁদের কথায়, মোবাইল ফোন পাঁচতারা হোটেলের মত, স্পা, ফ্রি বুফে সব থাকে, যাতে জীবাণুরা খুব আনন্দে হাত পা ছড়িয়ে থাকে। আমাদের পকেটে থাকে তাই মোবাইলের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত, আমাদের মোবাইলের নেশা, সারাক্ষণ কথা বলছি, ঘাঁটাঘাঁটি করছি আর সর্দি টর্দি হলে নাক চোখ থেকে জলের ফোঁটা মোবাইলে পড়ছে, যা জীবাণুতে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা। অথচ তা নিয়ে আমরা খাচ্ছি, অর্থাৎ জীবাণুকে পুষ্টিও জোগাচ্ছি।

একই সঙ্গে, একজনও মোবাইল পরিষ্কার করছেন না। লোকে ফোন নিয়ে ঘুরছে, পৃথিবীতে কোনও সীমান্ত নেই যেখানে মোবাইলে জীবাণু আছে কিনা তা পরীক্ষা হয়। আমরা জানতেও পারছি না, হাতের মুঠোয় বা পকেটে করে শত্রু নিয়ে ঘুরছি সারাক্ষণ। গবেষকরা বলেছেন, যদি কোনও করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি তাঁর ফোনে হাত দিয়ে তারপর সেই হাতেই বাসের হাতল বা তেমন কিছু ধরেন, আর তারপর বয়স্ক কোনও মানুষ সেই হাতল ধরেন, তখন গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হয়। করোনার এই অস্বাভাবিক গতিতে ছড়িয়ে পড়ার রহস্য সম্ভবত ওই মোবাইল ফোনেই লুকিয়ে, তাঁরা বলছেন।

মার্চেই ভারতীয় চিকিৎসকরা বলেন, নিয়মিত হাত পরিষ্কারের পাশপাশি স্মার্টফোনও প্রতি দেড় ঘণ্টায় একবার করে অ্যালকোহল বেসড স্যানিটাইজার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। কয়েক ফোঁটা স্যানিটাইজার তুলোয় ফেলুন, সাবধানে গোটা ফোন মুছে ফেলুন। বলেছেন দিল্লির শ্রী বালাজি অ্যাকশন মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট জ্যোতি মুট্টা।