নয়াদিল্লি: ফের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে আড়িপাতার অভিযোগ তুলল কংগ্রেস। হোয়াটসঅ্যাপের প্রকাশ করা তথ্যকে হাতিয়ার করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আর্জি জানিয়েছে বিরোধী দলটি। এরপরই, মার্কিন সোশ্যাল সাইটের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করল কেন্দ্র।
সম্প্রতি, ফেসবুক-মালিকানাধীন জনপ্রিয় সোশ্যাল সাইট হোয়াটসঅ্যাপ-এর তরফে জানানো হয়, ভারতে কয়েকজন সাংবাদিক ও সমাজকর্মীদের ফোনে আড়িপাতা হচ্ছে। তাঁদের ওপর নজরদারি চলছে। হোয়াটসঅ্যাপের দাবি, কিছু বেনামী ব্যক্তি বা সংগঠন ‘পেগাসাস’ নামের একটি ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে এই কাজ করছে।
এই নিয়ে বৃহস্পতিবার মোদি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা। টুইটারে তিনি লেখেন, আড়ি পাততে গিয়ে ধরা পড়ল মোদি সরকার। আতঙ্কের, তবে বিস্ময়ের নয়। বিজেপি সরকার - ১) গোপনীয়তার অধিকারের বিরুদ্ধে লড়েছিল। ২) সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞার আগে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নজরদারি কাঠামো গড়ে তুলেছিল।
সুরজেওয়ালার মতে, এবারও সুপ্রিম কোর্টের উচিত বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া এবং বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে নোটিস জারি করা। তিনি লেখেন, একটা সরকার যারা সাংবাদিক, সমাজকর্মী বা বিরোধীদের ওপর নজরদারি চালায় এবং নিজেদের নাগরিকদের অপরাধীর মতো ব্যবহার করে, আমাদের গণতন্ত্রে তারা নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা হারায়। আমরা শীর্ষ আদালতকে আহ্বান জানাচ্ছি, স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এই অবৈধ কার্যকলাপের জন্য কেন্দ্রকে দায়ী করা হোক।
হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছে, ‘এনএসও গ্রুপ’ নামে একটি ইজরায়েলি নজরদারি সংস্থা ওই বিশেষ স্পাইওয়্যার প্রযুক্তির নেপথ্যে রয়েছে। ওই প্রযুক্তির মাধ্যমে কিছু বেনামী সংগঠন বা ব্যক্তি প্রায় ১,৪০০ জনের মোবাইল ফোনে হ্যাক করে সব তথ্য তুলে নিচ্ছে। সোশ্যাল সাইটের তরফে আরও জানানো হয়েছে, চার মহাদেশে ছড়িয়ে থাকা প্রায় কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং শীর্ষ সরকারি আধিকারিকের ওপর এই নজরদারি চলছে। তবে, কাদের নির্দেশে সাংবাদিকা বা সমাজকর্মীদের ওপর নজরদারি চলছে, তা খোলসা করেনি হোয়াটসঅ্যাপ।
বিরোধীদের আক্রমণের মুখে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র সরকার। হোয়াটসঅ্যাপের থেকে এই মর্মে জবাব তলব করেছে কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রক। আগামী ৪ নভেম্বরের মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে মার্কিন সংস্থাকে।
এদিকে, যে ইজরায়েলি সংস্থা এই সফটওয়্যারটি তৈরি করেছে, সেই এনএসও গ্রুপ-এর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার ক্যালিফর্নিয়ার আদালতে মামলা দাখিল করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। যদিও, ইজরায়েলি সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা কোনও স্পাইওয়্যার তৈরি করেনি। সংস্থার পাল্টা দাবি, তাদের মূল উদ্দেশ্য হল বিভিন্ন দেশের সরকারি গোয়েন্দা ও আইনরক্ষাকারী সংস্থাকে সন্ত্রাসবাদ ও অপরাধ মোকাবিলা করার জন্য প্রযুক্তি সরবরাহ করা।