কীভাবে ভারতীয় সংস্কৃতি, হিন্দু ধর্ম গাঁধীজিকে অনুপ্রাণিত করেছে, সেকথা বলতে গিয়ে ভাগবত বলেছেন, গাঁধীজি বলতেন, আমার ধর্ম সব ধর্মের সেরা। গাঁধীজি বলতে চেয়েছিল ধরম শব্দটি, কিন্তু ইংরেজিতে তার কোনও সমার্থক শব্দ নেই। গাঁধীজি স্বরাজ (স্বশাসন) শুরু করেছিলেন, কিন্তু স্বধর্ম না বুঝলে স্বরাজও বোঝা সম্ভব নয়।
ভাগবত বলেন, গাঁধীর প্রেক্ষিতে একজন হিন্দু দেশপ্রেমিকের উত্থান নিয়ে লেখা একটি বইয়ের প্রকাশ ও আরএসএস প্রধানের উপস্থিতি মানুষের কাছে অনেক অর্থ, গুরুত্বই বহন করে। লোকে বলবে, আমরা গাঁধীজিকে আত্মসাত্ বা গ্রাস করার চেষ্টা করছি। কিন্তু একজন বড় মাপের ব্যক্তিত্বকে কেউই দখল করতে পারে না। এই বইয়ের উদ্দেশ্য সেটা নয়। এটা গাঁধীজির জীবনের ওপর ব্যাপক গবেষণা করে লেখা। বইয়ে পোরবন্দর থেকে গাঁধীজির ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার সফর ও সেখান থেকে দেশে ফেরা নিয়ে আলোচনা রয়েছে।
সহনশীলতাই গাঁধীর ধর্ম সম্পর্কে উপলব্ধ বলে মন্তব্য করেন ভাগবত। বলেন, বৈচিত্র্যে মধ্যে ঐক্য আমাদের আবেগ, কেবলমাত্র নীতির ব্য়াপার নয়। গাঁধীজি বলতেন, আমি আমার ধর্ম কঠোর ভাবে মানব, কিন্তু অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা করব। এটাই ভারতীয় চিন্তাধারার মৌলিকত্ব। পার্থক্য মানেই এখানে বিচ্ছেদ নয়।
আরএসএস প্রধান বলেন, গাঁধী বুঝেছিলেন, স্বাধীনতার লড়াই শুধুমাত্র যারা ক্ষমতায় রয়েছে, তাদেরই বদলানো নয়, নিজেদেরও বদল ঘটানো। উনি পরিষ্কার বলেছিলেন, পশ্চিমী সভ্যতা আমাদের নিজস্ব সভ্যতাকে শেষ করে দিয়েছে. আমরা ধর্মভ্রষ্ট হয়েছি। ডঃ হেডগেওয়ারও বলতেন, অন্যকে দোষ দিও না। তুমি দাস হতে তৈরি ছিলে বলেই দাসত্বের শৃঙ্খলে জড়িয়েছ। তোমার মধ্যে কোনও একটা ঘাটতি আছে। গাঁধিজির মধ্যেও এমন সমান্তরাল ভাবনা দেখেছি।
বইয়ে দাবি করা হয়েছে, ১৮৯৩-৯৪ সালে গাঁধীকে ধর্মবদলের জন্য় চাপ দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায় তাঁর মুসলিম নিয়োগকর্তা ও খ্রিস্টান সহকর্মীরা, কিন্তু তিনি সরাসরি তা মানতে অস্বীকার করেন। ১৯০৫ নাগাদ তিনি একজন ভক্তিপ্রবণ হিন্দু হয়ে ওঠেন।