নয়াদিল্লি: মহাসমারোহে অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন হলেও, লোকসভা নির্বাচনে সেখানে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশের অন্যত্রও তেমন ভাল করতে পারেনি গেরুয়া শিবিরে। নির্বাচনী ফলাফলের নেপথ্যে বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের খবর যখন উঠে আসছে, সেই আবহেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত এবং বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতার সাক্ষাৎ ঘিরে সরগরম জাতীয় রাজনীতি।  ইদানীং কালে RSS-এর সঙ্গে বিজেপি-র দ্বন্দ্বের খবর যেমন সামনে এসেছে, তেমনই নরেন্দ্র মোদি এবং যোগীর বোঝাপড়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বার বার। সেই আবহে রাজনৈতিক ভাবে এই সাক্ষাৎ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। (Bhagwat-Yogi Meet)


শনিবার বিকেলে গোরক্ষপুরে যোগী, ভাগবতের সাক্ষাৎ রয়েছে। সাক্ষাতের পর ভাগবত গোরক্ষনাথ মন্দিরেও যাবেন বলে জানা গিয়েছে। নেহাত সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে উল্লেখ করা হলেও, যোগীর গড় গোরক্ষপুরের এই সাক্ষাৎ ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে। কারণ অতি সম্প্রতিই একটি ভাষণে 'সত্যিকারের সেবক কখনও অহঙ্কারী হয় না' বলে মন্তব্য করেছিলেন ভাগবত। "রামভক্তি দেখিয়েও অহঙ্কারী হয়ে ওঠা দলকে ২৪০-এ আটকে যেতে হয়েছে" বলে মন্তব্য করেন RSS নেতা ইন্দ্রেশ কুমারও। (RSS-BJP Rift)


মোদি, অমিত শাহ এবং জেপি নাড্ডাকে নিশানা করেই ভাগবত এবং ইন্দ্রেশ ওই মন্তব্য করেছেন কি না, প্রশ্ন উঠছিল বিগত কয়েক দিন ধরেই। RSS যদিও সাফাই দিতে এগিয়ে এসেছে তড়িঘড়ি। তাদের দাবি, মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে। বিজেপি-র কাউকে নিশানা করে ওই মন্তব্য করা হয়নি। ইন্দ্রেশ তাঁর ব্যক্তিগত মতামত জানিয়েছেন বলেও দাবি করেছে RSS. 


আরও পড়ুন: RSS News: 'অহঙ্কারই পতনের কারণ', RSS নেতৃত্বের নিশানায় কে? বিতর্কে পড়ে সাফাই দিল সঙ্ঘ


সেই আবহেই ভাগবত এবং যোগীর এই সাক্ষাৎ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ৪ জুন লোকসভা নির্বাচনের ফলঘোষণার পর এই প্রথম বিজেপি-র শীর্ষ পাঁচ নেতাদের মধ্যে কারও সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ভাগবত। সেই একজন আবার যোগী, যাঁর সঙ্গে দিল্লির বিজেপি নেতৃত্বের মতানৈক্যের খবর উঠে আসছে লাগাতার। লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই থেকে প্রচার কৌশল, যোগীর মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ শোনা গিয়েছে। এমনকি যোগীর মন্ত্রিসভার সদস্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও দিল্লির বিজেপি নেতৃত্ব নিজেদের পছন্দকেই প্রাধান্য দিয়েছেন বলে রয়েছে অভিযোগ। যেকারণে মোদি-শাহদের সঙ্গে যোগীর দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। 


তাই বিজেপি-র অভিভাবক সংস্থার প্রধান হিসেবে ভাগবত দিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশের মধ্যে দূরত্ব ঘোচাতে উদ্যোগী হয়েছেন কি না, প্রশ্ন উঠছে। নির্বাচন চলাকালীন RSS-কে আর প্রয়োজন নেই বলে নাড্ডা মন্তব্য করলেও, হারের পর আবারও বিজেপি সঙ্ঘের ছত্রছায়ায় ঢুকতে চাইছে বলেও দাবি উঠে আসছে। সেক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশে সঙ্ঘের ভিত আরও মজবুত করে তুলতেই ভাগবত এবং যোগীর এই সাক্ষাৎ বলে জল্পনা শুরু হয়েছে।