নয়াদিল্লি: কোভিড-১৯ মাত্র সাতদিনে ১০০ শতাংশ পুরোপুরি সারিয়ে তোলে বলে দাবি করে যোগগুরু রামদেবের আনা ওষুধ ‘করোনিল’ ঘিরে বিতর্ক বহাল রয়েছে। রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড, মহারাষ্ট্র সহ বেশ কিছু রাজ্য এই ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান। তারা ওষুধটি বাজারে বিক্রির বিরুদ্ধে।
বাবা রামদেব নিজের সহযোগী বালকৃষ্ণকে পাশে নিয়ে গত মঙ্গলবার করোনিল কিট বের করার ঘোষণা করতেই তীব্র আপত্তি ওঠে নানা মহল থেকে। কেন্দ্রীয় আয়ুষমন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই ওষুধের ট্রায়াল সংক্রান্ত যাবতীয় নথি পেশ করতে বলা হয় রামদেবের পতঞ্জলি সংস্থাকে। পাশাপাশি জানিয়ে দেওয়া হয়, তাদের ১০০ শতাংশ করোনা সারানোর দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষার মাধ্যমে যথাযথ ভাবে প্রমাণিত হওয়া পর্যন্ত এই ওষুধের কোনও প্রচার, বিজ্ঞাপনও করা যাবে না। মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েক গতকাল বলেন, পতঞ্জলির পাঠানো রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পরই তাঁর মন্ত্রক তাদের আয়ুর্বেদিক ওষুধ করোনিল ও স্বশরী নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবে।
এবার মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ সরাসরি রামদেবকে সতর্ক করে জানিয়ে দিলেন, তাঁরা ক্ষতিকর ওষুধ বিক্রি করতে দেবেন না। পতঞ্জলির করোনিল-এর ক্লিনিকাল পরীক্ষা আদৌ হয়েছিল কিনা, জয়পুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস খতিয়ে দেখবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হু্ঁশিয়ারির পরিপ্রেক্ষিতে রাম কদম নামে রাজ্যের এক বিজেপি নেতার পাল্টা দাবি, জয়পুরের ন্য়াশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স করোনিল, স্বশরীকে ছাড়পত্র দিয়েছে। করোনিলকে কীসের ভিত্তিতে ক্ষতিকর ওষুধ বলা হচ্ছে, পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি। মহারাষ্ট্র সরকার রামদেবের করোনিল ওষুধের ওপর ‘স্বআরোপিত বাধা’ প্রত্যাহার করবে কিনা, তাও জানতে চান তিনি।
রাজস্থানের স্বাস্থ্য়মন্ত্রী রঘু শর্মাও বৈধ নিয়মপদ্ধতি ছাড়া করোনাভাইরাস সারানোর দাবি করে যে কোনও ওষুধের প্রচার, অনুমোদনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। রাজ্যের কোথাও করোনিল বিক্রির খবর পেলেই আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলেও সাবধানবাণী দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, রামদেব যদি বলেন, তাঁর ওষুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সেটা মানা যায়, কিন্তু তা কোভিড-১৯ সারিয়ে দেয়, আয়ুষ মন্ত্রকের অনুমোদন ছাড়া মেনে নেওয়া যায় না।
উত্তরাখন্ডের আয়ুর্বেদ দপ্তরের লাইসেন্স অফিসার ওয়াই এস রাওয়াত রামদেবের দাবির পরদিনই জানান, পতঞ্জলিকে নোটিশ দিয়ে জানাতে বলা হয়েছে, কী করে কোভিড ১৯ চিকিত্সার আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির অনুমতি পেল তারা। আয়ুর্বেদ দপ্তর পতঞ্জলিকে শুধুমাত্র জ্বর, কাশি সারানো, রোগ প্রতিরোধ শক্তি পুষ্ট করার দাওয়াই তৈরির লাইসেন্স দিয়েছে। বলেন, ১৯৫৪-র তৃতীয় ডিএমআরআইয়ের আওতায় অনুমোদন নিতে হয়, তাই এমন দাবি করা বৈধ নয়।