রাবাত: তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল মরক্কো। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.৮। তার প্রকোপে শনিবার সকাল পর্যন্ত কমপক্ষে ২৯৬ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছিল। বেলা বাড়তে সেই সংখ্যা এসে ঠেকল ৬৩০-তে। আহত হয়েছেন প্রায় ২০০ জন মানুষ। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সমস্ত ভিডিও এবং ছবি সামনে এসেছে, তাতে বিধ্বস্ত অবস্থায় দেখা গিয়েছে উত্তর আফ্রিকার অন্তর্গত দেশটিকে। চারিদিক ধুলোয় ঢাকা, বড় বড় বাড়িঘর মিশে গিয়েছে মাটিতে, এমনই চেহারায় দেখা গিয়েছে মরক্কোকে। শুধু তাই নয়, UNESCO হেরিটেজ হিসেবে চিহ্নিত, ঐতিহাসিক মারাকেশ শহরকে ঘিরে থাকা লাল দেওয়ালও ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। (Morocco Earthquake)


স্থানীয় সময় অনুযায়ী, শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মরক্কো। আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.৮। কম্পনের উৎসস্থ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, মারাকেশ থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরের হয়েছে অ্যাটলাস পার্বত্য অঞ্চলের উকাইমেদেন স্কি রিসর্ট সংলগ্ন এলাকাকে। ভূগর্ভের ১৮.৫ কিলোমিটার গভীরতা থেকে ছড়িয়ে পড়ে কম্পন। এতটাই তীব্র ছিল ভূমিকম্প যে, পর্তুগাল এবং আলজিরিয়াতেও অনুভূত হয়েছে কম্পন। (Earthquake in Morocco)



মারাকেশ শহরের পুরাতন শহর, যা কিনা মদিনা হিসেবেও পরিচিত, সেখানে মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে থাকা লাল রংয়ের দেওয়ালের খ্যাতি গোটা বিশ্বে। UNESCO-র হেরিটেজ হিসেবেও চিহ্নিত ওই দেওয়াল। ভূমিকম্পের ফলে সেটিও জায়গায় জায়গায় ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে বলে খবর। দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত আল-হউজ, মারাকেশ, উয়ারজাজাতে, আজিলাল, চিচাউয়া এবং তারুদান্তে থেকেই মৃতদের পরিসংখ্যান মিলেছে। ১৫০-র বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তাঁরা। 



আরও পড়ুন: N. Chandrababu Naidu: কোটি কোটি টাকা হাতানোর অভিযোগ, দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু


আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, অ্যাটলাস পর্বতমালার ভূমির ওঠাপড়ার জন্যই এই ভূমিকম্প। এর আগে ২০০৪ সালে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পের সাক্ষী থেকেছিল মরক্কো। সেবারও প্রায় ৬০০ মানুষের মৃত্যু হয়। ওই ভূমিকম্প 'আল হোশেইমা' নামে পরিচিত। দেশের উত্তরের উপূল এলাকায় মাটির নীচের পাতের অবস্থানে হেরফের ঘটাতেই সেবার ভূমিকম্প হয়। সেবার কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.৩।



এবারের তীব্রতা ২০০৪ সালের হিসেব ছাপিয়ে গিয়েছে। মরক্কোয় ভূমিকম্পের ঘটনা সচরাচর ঘটে না। আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১২০ বছরে এত তীব্র ভূমিকম্প হয়নি মরক্কোয়। এর আগে মূলত দেশের পূর্বেই ভূমিকম্প ঘটতে দেখা গিয়েছে। শুক্রবাররে ভূমিকম্পে মরক্কোর জন্য প্রার্থনা করছে গোটা পৃথিবী। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, 'এই দুর্ভাগ্যজনক সময়ে, মরক্কোর পাশে আছে ভারত। মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাু। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। এই কঠিন সময়ে সবরকম ভাবে মরক্কোকে সাহায্য় করতে প্রস্তুত ভারত'।