Vastu Shastra: আলমারি আমাদের বাড়ির অন্য সকল আসবাবপত্রের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ।  আলমারিতে আমাদের অতি মূল্যবান জিনিসপত্র রাখা হয় যেমন টাকা পয়সা, সোনা গয়না, জরুরি কাগজপত্র, দলিল ইত্যাদি। তাই আলমারি ঘরের কোন কোণে রাখলে অর্থ সম্পদ বৃদ্ধি পাবে সেই দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। যদি সঠিক কোণে আলমারি না রাখা হয়, তা হলে অর্থ বৃদ্ধি পাওয়ার বদলে অর্থ হানি ঘটবে।

দেখে নেওয়া যাক আলমারি রাখার সঠিক কোণ কোনটা—

আলমারি ঘরের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে রাখতে হবে। দক্ষিণ-পশ্চিম দিক রাহুর দিক বলে মানা হয়। এই কোণে আলমারি রাখলে অর্থ আগমন ঘটে।

দক্ষিণ-পশ্চিম দিক অর্থাৎ দক্ষিণ দিকে বা পশ্চিম দিকে রাখতে হবে। দক্ষিণ দিকে রাখলে উত্তর দিকে আলমারির মুখ হবে এবং পশ্চিম দিকে রাখলে পূর্ব দিকে আলমারির মুখ হবে।

উত্তর দিক হল ধনের দেবতা কুবেরের দিক। এই দিকে মুখ করে আলমারি রাখলে কুবেরের দৃষ্টি আলমারির দিকে পড়ে। এর ফলে সম্পদ বৃদ্ধি হতে থাকে।

এ ছাড়া ঘরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের পশ্চিম দিকে আলমারি রাখা যেতে পারে, কারণ পশ্চিম কোণ হল সঞ্চয়ের কোণ। এই দিকে আলমারি রাখলে সঞ্চয় বাড়তে থাকে।

কোন কোণে আলমারি একদম রাখা যাবে না—

যদি উত্তর দিকে আলমারি রাখা হয়, যার মুখ থাকবে দক্ষিণ দিকে, এই রকম ভাবে আলমারি একদমই রাখা উচিত নয়। এর ফলে অর্থিক ক্ষতি হতে দেখা যায়।

উত্তর-পূর্ব কোণে অর্থাৎ ঈশান কোণে আলমারি রাখা বাস্তু নিয়ম বিরুদ্ধ, কারণ এই কোণে বাস্তু পুরুষের মাথা থাকে। তাই কোনও ভারী জিনিস এই দিকে রাখা ঠিক নয়। এর ফলে বাড়ির মানুষজনেরা মানসিক রোগগ্রস্ত পর্যন্ত হতে পারেন।

দক্ষিণ-পূর্ব কোণ অর্থাৎ অগ্নি কোনেও আলমারি রাখা যাবে না। কারণ এই কোণের অধিপতি দেবতা অগ্নিদেব। যদি এই কোণে আলমারি রাখা হয়, তা হলে বাড়িতে অর্থ আসার পথ বন্ধ হয়ে যায়। ধন সম্পদ বৃদ্ধিতেও বাধা সৃষ্টি হয়।

বাস্তু অনুসারে শোবার ঘরের সেরা দিক নির্দেশ

আদর্শভাবে যখন শয়নকক্ষটি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত তখন বাড়ির মালিকের পক্ষে এটি সুস্বাস্থ্য এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসে। এটি আয়ু বাড়ায়। বাড়ির উত্তর-পূর্ব বা দক্ষিণ-পূর্ব জোনে একটি শয়নকক্ষ এড়িয়ে চলুন। দক্ষিণ-পূর্বে এটি দম্পতির মধ্যে ঝগড়া হতে পারে। উত্তর-পূর্বের শোবার ঘরটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার কারণ হতে পারে। বাচ্চাদের শয়নকক্ষটি বাড়ির পূর্ব বা উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে হওয়া উচিত।

এছাড়াও, উত্তরের একটি শয়নকক্ষটি সবার জন্য ভাগ্যবান বলে মনে করা হয়। এটি বিশেষত অল্প বয়স্ক শিক্ষার্থীদের জন্য খুব ভাগ্যবান যারা চাকরি বা ব্যবসায়ের সুযোগ খুঁজছেন। একইভাবে, পূর্বের একটি শয়নকক্ষ তাদের একটি তীক্ষ্ণ বুদ্ধি দেবে এবং তাদের পড়াশোনায় দক্ষ হতে সহায়তা করবে।

বাস্তু অনুসারে বিছানা বসানো-

বাস্তুর মতে আপনার বিছানাটি পূর্ব বা দক্ষিণের দিকে রাখা উচিত। বিছানাটির মাথাটি এই দিকে মুখ করা উচিত।

মাস্টার শয়নকক্ষে বিছানা স্থাপন গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি ঘুমের গুণমান এবং পরিবারের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। বাস্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, মাস্টার শয়নকক্ষে ঘুমের অবস্থান দক্ষিণ বা পশ্চিম হতে হবে। বিছানাটি দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রাচীরের বিপরীতে রাখা উচিত। আপনি শুয়ে পড়লে আপনার পা উত্তর-পূর্ব দিকে নির্দেশ করা উচিত।

অতিথি ঘরে বিছানার মাথাটি পশ্চিম দিকে হওয়া উচিত। এছাড়াও, আপনার বিছানাটি কাঠের তৈরি হলে সবচেয়ে ভাল। ধাতু নেতিবাচক কম্পন তৈরি করতে পারে। ঘনিষ্ঠতা উৎসাহিত করার জন্য, একটি দম্পতির একক গদিতে ঘুমানো উচিত। দুটি পৃথক গদিতে যোগদান করবেন না।

ঘরের কোণে বিছানা স্থাপন করা এড়িয়ে চলুন কারণ এটি ইতিবাচক শক্তির অবাধ প্রবাহকে বাধা দেয়। বাস্তুর মতে, বিছানাটি কেন্দ্রীয় প্রাচীর বরাবর হওয়া উচিত যাতে চারদিকে ঘোরে যাওয়ার যথেষ্ট জায়গা থাকে।