মুম্বই : ১৩ মাসে তিন বার করোনার সংক্রমণ বাসা বেঁধেছে দেহে। কোভিডের দু'টি ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও দু'বার কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। মুম্বইয়ের ২৬ বছরের চিকিৎসক শ্রুস্তি হালারির শারীরিক অবস্থা চিন্তা বাড়াচ্ছে গবেষকদের। পাশাপাশি ভ্যাকসিনের কার্যক্ষমতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।


ভ্যাকসিনের ২টো ডোজ নেওয়ার পরও স্বস্তি মিলছে না। অনেক ক্ষেত্রেই পুরো ডোজ নিয়েও জীবনের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে সংক্রমিতদের। সম্প্রতি সেই আশঙ্কা উস্কে দিলেন মুম্বইয়ের বীর সাভারকর হাসপাতালের চিকিৎসক শ্রুস্তি। তবে শুধু শ্রুস্তি নন, সংক্রমণের শিকার হয়েছে তাঁর পরিবারও। বাবা, মা ছাড়াও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর ভাই। চলতি মাসে প্রথমবার ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন তাঁরা। কোভিড ভ্যাকসিনের দু'টি ডোজ নেওয়ার পরও পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে তাঁদের।


ইতিমধ্যেই শ্রুস্তির পরিবারকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভাই ও দিদি থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহ করছেন চিকিৎসকরা। দু'জনের দেহে কোভিডের কোন ভ্যারিয়েন্ট থাবা বাসিয়েছে তা বুঝতে চাইছেন তাঁরা। গত বছর জুনের ১৭ তারিখ প্রথম করোনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে শ্রুস্তির। সেই সময় মুম্বইয়ের মুলন্দ এলাকার সাভারকর হাসপাতালে কোভিড ডিউটি করছিলেন তিনি। তখন অবশ্য করোনার সংক্রমণ এত মারাত্মক ছিল না তাঁর।


চলতি বছরে প্রথম কোভিশিল্ড নেয় শ্রুস্তির পরিবার। গত ৮ মার্চ এই ভ্যাকসিন নেন তাঁরা। পরবর্তীকাল ২৯ এপ্রিল তাঁদের সেকেন্ড ডোজ দেওয়া হয়। কিন্তু দেখা যায়, এক মাস পরই ২৯ মে ফের শ্রুস্তির কোভিডের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। দ্বিতীয়বার তাঁর শরীরে করোনার সামান্য লক্ষণ দেখা দিয়েছিল। বাড়িতে থেকেই সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।


যদিও বেশিদিন সুস্থ থাকতে পারেননি শ্রুস্তি। জুলাইয়ের ১১ তারিখ ফের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে তাঁর। এবার শ্রুস্তির সঙ্গে সংক্রমণের শিকার হয় গোটা পরিবার। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায়, সবাইকে সুস্থ করতে রেমডেসিভির ইঞ্জেকশন দিতে হয়। শ্রুস্তি বলেন, ''এবার করোনা আমার জন্য বেশি সমস্যা তৈরি করেছে। আমার মা ও ভাইয়ের ডায়াবেটিস রয়েছে। বাবা হাইপারটেনশন ও কোলেস্টরলের রোগী। করোনার ফলে আমার ভাইয়ের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। তাই ভাইকে দু'দিন অক্সিজেনের সাপোর্টে রাখা হয়।''


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিডের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন কখনও রক্ষাকবচ হতে পারে না। ভ্যাকসিনের দু'টো ডোজ নেওয়ার পরও কেউ ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন। এ প্রসঙ্গে মুম্বইয়ের ওখার্ড হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিনের প্রধান বেহরাম পর্দিওয়ালা বলেন, ''আমি এমন অনেক রোগী দেখেছি, যারা দুটো টিকা নেওয়ার পরও কোভিডে আক্রাক্ত হয়েছেন। সব বয়সের রোগীরই এই সংক্রমণ হতে পারে। ভ্যাকসিন রোগীর ওপর ভাইরাসের তীব্রতা কম করে ও তাকে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করে।''