মুম্বই: নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যায়নি। সেটাই নাকি অপরাধ! শিশুকন্যাকে নিদারুণ নির্যাতন বাবার। হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হল। শুধু তাই নয়, জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকাও দেওয়া হল একরত্তি মেয়েকে। অন্যের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটি বাবার হাতে অত্যাচারিত হওয়ার কথা মেনে নিয়েছে বলে খবর। (Father Assaults Daughter)

মুম্বইয়ের মানখুর্দ থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, রাজেশ্রম ওরফে ভগবান নিজের পাঁচ বছরের কন্যার উপর অকথ্য অত্যাচার চালান। মেয়েটি নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে না যাওয়াতেওই নাকি মেজাজ হারান রাজেশ্রম। মেয়েকে শাস্তি দিতে গিয়ে হিংস্র হয়ে ওঠেন তিনি। প্রথমে হাত-পা বাঁধেন মেয়ের। এর পর বেধড়ক মারধর করেন মেয়েটিকে। (Mumbai News

তবে সেখানেই থামেননি রাজেশ্রম। জ্বলন্ত সিগারেট নিয়ে মেয়ের পায়ে ছ্যাঁকা দেন তিনি। স্বামীকে নিরস্ত করতে না পেরে গোটা দৃশ্য গোপনে ক্যামেরাবন্দি করেন রাজেশ্রমের স্ত্রী। পরিচিত এক মহিলাকে ওই ভিডিও পাঠিয়ে দেন তিনি। ওই মহিলা আবার তাঁর স্বামী, আব্দুল হাকিম কায়ুমকে ভিডিওটি পাঠান। 

আব্দুল এবং তাঁর পরিবার মানখুর্দের কারবালা চলের বাসিন্দা। আব্দুল এলাকায় পশুপ্রেমী হিসেবে পরিচিত। ৩০ জুন দুপুর ২টো বেজে ৪৫ মিনিট নাগাদ স্কুল ছেলেমেয়েদের আনতে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় স্ত্রীর কাছ থেকে একটি ভিডিও ঢোকে তাঁর ফোনে। সেই ভিডিও চালু করতেই চমকে যান তিনি। রাজেশ্রমকে চিনতে পারেন তিনি। নিজের মেয়ের উপর তিনি অত্যাচার চালাচ্ছেন বলে বুঝতে পারেন। 

আর দেরি না করে সটান মানখুর্দ থানায় পৌঁছন আব্দুল। পুলিশকে ওই ভিডিও দেখান তিনি। মেয়েটিকে উদ্ধার করার আর্জি জানান। এর পর আব্দুলকে সঙ্গে নিয়েই রাজেশ্রমের বাড়ির উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ে পুলিশ। সেখানে রাজেশ্রমের কাছেই সবকিছু জানতে চাওয়া হয় প্রথমে। এর পর নির্যাতনের শিকার মেয়েটিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশের সামনে ভেঙে পড়ে মেয়েটি। জানায়, নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমায়নি বলে বাবা আত্যাচার চালিয়েছে তার উপর।

এর পরই রাজেশ্রমের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১১৫(২), ১১৮(১) ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে জুভেনাইল জাস্টিস আইনেও। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। চিকিৎসার জন্য মেয়েটিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। মেয়েটির নিরাপত্তায় কোনও খামতি রাখা হবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।