মুম্বই: মাথার উপর দিয়ে ট্রেন ছোটানোর ভাবনা এসেছিল জাপানকে দেখে। কিন্তু ভারী বৃষ্টিতে মায়ানগরীতে মাথার উপর আটকে গেল সেই মনোরেলই। ভারী বৃষ্টিতে মনোরেলটি আটকে গিয়েছে, কিছুতেই ট্রেন চালু করা যাচ্ছে না বলে খবর। ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি ও ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে মাটি থেকে উঁচুতে, লাইনের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে মনোরেল। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ১০০-র বেশি যাত্রী তাতে আটকে রয়েছেন বলে খবর। (Mumbai News)

ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে উদ্ধারকারী দল। ক্রেন দিয়ে নামানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যাত্রীদের। ট্রেনের দরজা খোলা যাচ্ছে না বলে দানা গিয়েছে। সেই অবস্থায় যাত্রীরা কী ভাবে বেরোবেন, তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মুম্বই মেট্রোপলিটন রিজিয়ন ডেভলপমেন্ট (MMRDA) জানিয়েছে, বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আর তাতেই আটকে গিয়েছে মনোরেল। পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে, উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে তারা। (Mumbai Monorail Breaks Down)

ঘটনাস্থল থেকে যে ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে যাত্রীদের জানলা ভাঙার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে। এর পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলবাহিনী। ক্রেন বেয়ে কয়েক জনকে নীচে নামতেও দেখা যায়। মঙ্গলবার সন্ধে ৬টা বেজে ১৫ মিনিট নাগাদ চেম্বুর ও ভক্তি পার্কের মধ্যে বিপত্তি বাঁধে বলে জানা গিয়েছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস সকলকে শান্ত থাকতে আর্জি জানিয়েছেন। যাত্রীদের নিরাপদে বের করে আনা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় দেবেন্দ্র লেখেন, ‘সকলকে বলব, ধৈর্য ধরুন। আমি MMRDA কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। পুলিশ কমিশনারের সঙ্গেও কথা হয়েছে। কেন এমন ঘটল, তার তদন্ত হবে’। বৃহন্মুম্বই পুরসভা হেল্পলাইন নম্বর ১৯১৬ প্রকাশ করেছে। জরুরি পরিস্থিতিতে ওই নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

গত দু'দিন ধের একনাগাড়ে বৃষ্টি হয়ে চলেছে মুম্বইয়ে। এর ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাটে সব জলমগ্ন। গাড়িঘোড়া সব খালি পড়ে রাস্তায়। গাড়ি নিয়ে যাঁরা বেরিয়েছেন সাহস করে, রাস্তা খুঁজেই পাচ্ছেন না। প্রতি বছর বর্ষায় একই অবস্থা হয় মুম্বইয়ের। এবার মাত্র দু'দিনের বৃষ্টিতেই এমন পরিস্থিতি, যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নাগরিকরা। 

জানা যাচ্ছে, প্রায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে মুম্বইয়ে। এর মধ্যে সোমবার মাত্র আট ঘণ্টায় ১৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। মুম্বইয়ের প্রাণ টিকে যে ট্রেনের উপরও, সেই ট্রেন পরিষেবাও বিপর্যস্ত মিঠি নদীর জলস্তর বিপদসীমা পেরিয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। নদী সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রায় ৫০০ মানুষজনকে সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেবেন্দ্র।