মুম্বই: রবিবার গোটা দেশ যখন ছুটি কাটাচ্ছে, তখন নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সুশান্ত সিংহ রাজপুত। তার আগের রাতে দুজনকে ফোন করেছিলেন তিনি। জানাল মুম্বই পুলিশের তদন্তকারী দল। যে চিকিৎসক তাঁর ডিপ্রেশনের চিকিৎসা করতেন আজ তাঁর সঙ্গে পুলিশ কথা বলতে পারে।


জানা গিয়েছে, রাত ১টা ৪৭ মিনিটে সুশান্ত ফোন করেন অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীকে। কিন্তু রিয়া ফোন ধরেননি। এরপর ১টা ৫১ মিনিটে তিনি ফোন করেন তাঁর বন্ধু-অভিনেতা মহেশ শেট্টিকে, মহেশও ধরেননি ফোন। তদন্তে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল সাড়ে আটটায় মহেশ সুশান্তকে ফোন করেন। কিন্তু সুশান্ত আর ফোন ধরেননি। মহেশ ভাবেন, তিনি ঘুমোচ্ছেন, এক ঘণ্টা বাদে, সাড়ে নটা নাগাদ ফের ফোন করেন। কিন্তু এবার আর ফোন বাজেনি। সুশান্তের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে ও কল রেকর্ড ঘেঁটে এই তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে।

সুশান্তের রাঁধুনি নীরজ ও বাড়িতে থাকা অন্যান্য লোকরা জানিয়েছেন, ব্রেকফাস্টের ঠিক আগে তিনি এক গ্লাস ডালিমের রস খেয়েছিলেন।  বেলা ১০টা ২৫ মিনিটে নীরজ তাঁর দরজায় ধাক্কা দেন, তিনি কী খাবেন জানতে চেয়ে। কিন্তু তিনি আর সাড়া দেননি।  নীরজ ছাড়াও বাড়িতে ছিলেন সুশান্তের এক বন্ধু ও আর এক কাজের লোক কেশব। সুশান্তের বন্ধুর ঘুম ভাঙে বেলা ১১টা নাগাদ। কাজের লোকদের কাছ থেকে তিনি সুশান্তের কথা জানতে পারেন, দরজায় ধাক্কা দেন। সাড়া না পাওয়ায় ফোন করেন তাঁর মোবাইলে, ভেতরে ফোন বেজে যায়, কেউ ধরেনি।

এরপর খবর দেওয়া হয় গোরেগাঁওয়ের বাসিন্দা সুশান্তের দিদি ঋতুকে। তখনই চলে আসেন ঋতু। ততক্ষণে একজন কাজের লোক এক চাবিওয়ালাকে ডেকে ফেলেছেন সুশান্তের শোওয়ার ঘরের দরজা খুলতে। ঋতুর স্বামী হরিয়ানা সরকারের আধিকারিক, তিনি তাঁকে ফোন করেন, বলেন গোটা ঘটনা। সুশান্তের জামাইবাবু তখন ফোন করেন মুম্বই পুলিশ কমিশনারকে।

বেলা ১২টা ২৫-এ খুলে ফেলা হয় বেডরুমের দরজা। উদ্ধার হয় অসংখ্য মানুষের হার্টথ্রবের ঝুলন্ত দেহ। ময়নাতদন্তে জানা যায়, শ্বাসরোধের জেরে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তবে তিনি ডিপ্রেশনে ভুগতেন বলে জানা গেলেও মহারাষ্ট্র সরকার পেশাদারি শত্রুতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ বলেছেন, মুম্বই পুলিশ সে দিকটিও তদন্ত করে দেখবে। টুইটে তিনি বলেছেন, সংবাদমাধ্যম সূত্রে প্রকাশ, সুশান্ত পেশাদারি শত্রুতার কারণে হতাশায় ভুগতেন। পুলিশ সে ব্যাপারে তদন্ত করবে।