কেদারনাথ : অক্ষয় তৃতীয়ায় খুলে গিয়েছ মন্দির। এবছর যাত্রা শুরু করেছেন পুণ্যার্থীরা। তুষারশুভ্র হিমালয়ের কোলে শিবধাম কেদারনাথ। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটে এই তীর্থক্ষেত্রে। এই মন্দিরে পৌঁছতে অনেকটা পথই পেরোতে হয় ঘোড়ার পিঠে। যাত্রীবহন করে কিছু খচ্চরও। কিন্তু এবার কেদারনাথ যাত্রা শুরু হতেই দেখা গেল মহাসঙ্কট। কী এক অজানা রোগের গ্রাসে একের পর এক ঘোড়া ও খচ্চর। ২ দিনে ঘটল মৃত্যুমিছিল
সূত্রের খবর, কেদার যাত্রার পথে এক রহস্যময় রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ঘোড়া-খচ্চররা। এর ফলে তীর্থযাত্রী ও পশুপালকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গত দুদিনে ১৪টি ঘোড়া-খচ্চরের সন্দেহজনক অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বিবেচনা করে উত্তরাখণ্ড সরকার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য এই যাত্রাপথে ঘোড়া-খচ্চর চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
রবিবার ৮ টি এবং সোমবার ৬ টি ঘোড়া ও খচ্চরের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এলাকার বহু মানুষের রুজিরুটি নির্ভর করে এই পশুদের উপর। এই ঘটনার পর পশুপালন বিভাগ সতর্ক হয়ে উঠেছে। পশুপালন বিভাগের সচিব ডাঃ বি.ভি.আর.সি. পুরুষোত্তম নিজেই রুদ্রপ্রয়াগে গিয়ে পরিস্থিতি স্বচক্ষে যাচাই করেন। তিনি জানান, পশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া রোগ প্রতিরোধের জন্য সতর্কতামূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
হিসার থেকে বিশেষ দল কেদারনাথে যাচ্ছে
সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকার এবং হরিয়ানার হিসার থেকে বিশেষ দল কেদারনাথে যাচ্ছে। এতগুলি পশুর মৃত্যুর তদন্ত হবে । রোগের প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা হচ্ছে । ডাঃ পুরুষোত্তম জানান, প্রাথমিকভাবে এটি কোনও ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের ফলে হয়ে থাকতে পারে। তবে, তদন্তের পরেই সঠিক কারণ স্পষ্ট হবে।
পশুপালন বিভাগের সচিব ডাঃ বি.ভি.আর.সি. পুরুষোত্তম জানান, এর আগে এপ্রিল মাসে ঘোড়া ও খচ্চরদের মধ্যে ইকুইন ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। সে কথা মাথায় রেখে ৪ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে মোট ১৬,০০০ ঘোড়া-খচ্চরের স্ক্রিনিং করা হয়, যার মধ্যে ১৫২টি পশুর সেরো স্যাম্পলিং পজিটিভ পাওয়া গিয়েছিল। তবে, আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় সবগুলো রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে।
তবে সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে, কেদারনাথ যাত্রা সম্পূর্ণ বন্ধ করা হবে না। তবে যাত্রাপথে পাঠানো প্রতিটি ঘোড়া-খচ্চরের শারীরিক অবস্থা আগে পরীক্ষা করা হবে। যেসব পশুর রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে, শুধুমাত্র তাদেরকেই তীর্থযাত্রীদের বহন করার অনুমতি দেওয়া হবে।
সচিব জানিয়েছেন, যদি কোনও পশুর নাক দিয়ে জল পড়তে দেখা যায়, তাহলে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা হবে। রিপোর্ট আসা পর্যন্ত তাকে কোয়ারান্টাইন সেন্টারে রাখা হবে। রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেই তাকে পাঠানো হবে।