নয়াদিল্লি: পরিবেশের খামখেয়ালিপনা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে আবহবিদদের। সেই আবহেই এবার বর্ষা নিয়ে পূর্বভাস দিল ভারতের মৌসম বিভাগ। এবছর সময়ের আগেই দেশে বর্ষার আগমন ঘটতে পারে বলে জানাল তারা। এর কারণ হিসেবে জানানো হয়েছে, ভারত মহাসাগরে ডাইপোল এবং লা নিনা-র কারণেই সময়ের আগে এবছর আগমন ঘটতে পারে বর্ষার। শুধু তাই নয়, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর অধিক বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহবিদরা।(Early Monsoon)


গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ভারত মহাসাগরে উষ্ণ জল যখন পশ্চিম দিকে ধাবিত হয়, সেই সময় অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা জল গভীর থেকে উপরে উঠে আসে। এর ফলে পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলিতে বন্যা দেখা দেয়। দীর্ঘায়িত হয় ভারতের গ্রীষ্মকালীন বর্ষার মেয়াদ। আবার পূর্ব এবং মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরে যে শীতল স্রোতের সৃষ্টি হয়, তাকে বলে লা নিনা। একই সময়ে এই দুই সমবর্তী ঘটনার জেরেই এবছর ভারতে সময়ের আগে বর্ষার আগমন ঘটবে এবং দীর্ঘায়িত হবে বলে মত আবহবিদদের। (Weather Updates)


আবহবিদরা জানিয়েছেন, এই দুই আন্তঃসংযুক্ত ঘটনাই ভারতের সময়ের আগে বর্ষা ডেকে আনবে। ভারতে সাধারণত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর বর্ষা থাকে, এবছর তা আরও এগিয়ে আসতে পারে। বলা হয়েছে, ওই দুই সমবর্তী ঘটনার জেরে মৌসুমি নিম্নচাপ পশ্চিম থেকে উত্তর-পশ্চিম ভারত এবং উত্তর আরব সাগরের দিকে এগোবে। ফলে ওই অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে।


আরও পড়ুন: High Court: সন্দেশখালির জমি দখল থেকে ধর্ষণের অভিযোগ, ইডির ওপর হামলা-সহ বাকি সব মামলার তদন্তে সিবিআই


এখনও পর্যন্ত সমুদ্রের জলের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে যে তথ্য মিলেছে, সেই অনুযায়ী, লা নিনা এবং ডাইপোলের প্রভাবে পশ্চিমে বর্ষার মূল অভিসারী অঞ্চলে পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে। এর ফলে আরব সাগর সংলগ্ন ভারতীয় উপকূল অঞ্চল বরাবর ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। একই সময়ে ডাইপোল এবং লা নিনার সৃষ্টি অত্যন্ত বিরল ঘটনা বলে মানছেন আবহবিদরা। তবে এর ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণগুলি আরও স্পষ্ট ভাবে বোঝা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী তাঁরা।


আবহবিদরা জানিয়েছেন, ক্রমশ পশ্চিম দিকে বৃষ্টি এলাকা সরে যেতে পারে। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের উপর নজরদারি চালানো গেলে, বিশদ তথ্য হাতে আসতে পারে। এর ফলে জলবায়ুর পট পরিবর্তন থেকে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে আগাম ধারণা মিলতে পারে, যা বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে আগামী দিনে।  


বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থা Skymet জানিয়েছে, এ বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০২ শতাংশ বৃষ্টিপাত হতে পারে। দক্ষিণ, পশ্চিম এবং উত্তর-পূর্ব ভারতেও যথেষ্ট বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। জুলাই এবং অগাস্ট মাসে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশায় বৃষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। বর্ষার প্রথমার্ধে তুলনামূলক বৃষ্টি কম হবে গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতেই।