কলকাতা: বিজেপি যুব মোর্চার নবান্ন অভিযান ঘিরে বৃহস্পতিবার এমনই তুলকালামকাণ্ড বেধেছিল হাওড়া ময়দান এলাকায়। এবার সেই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের নিয়েও শুরু হল বিতর্ক।


পুলিশের বিরুদ্ধে বিজেপির অভিযোগই নিল না থানা। অন্যদিকে, বিজেপির হেভিওয়েট নেতাদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করল পুলিশ।


বৃহস্পতিবারই বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় একটি ভিডিও ট্যুইট করে অভিযোগ করেন, ছাদ থেকে বিজেপি কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমা ছুড়েছে পুলিশ।


যদিও, হাওড়া সিটি পুলিশ কৈলাস বিজয়বর্গীয় দেওয়া ভিডিও প্রসঙ্গে পাল্টা ট্যুইট করে জানিয়েছে, পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোড়ার ছবি নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর প্রচার চলছে। পুলিশের একটি দলকে ছাদে মোতায়েন রাখা হয়েছিল। বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে ইট ছোড়ার পর সেই পুলিশকর্মীরা কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে।


কয়েকটি জায়গায় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক মারধর করে বলেও অভিযোগ বিজেপির। এসব নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে বৃহস্পতিবার রাতে জোড়াসাঁকো থানায় যান বিজেপি যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য এবং কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকরা।


বিজেপির দাবি, তাঁদের অভিযোগ নিতে চায়নি জোড়াসাঁকো থানা। যার প্রতিবাদে থানা চত্বরেই বিক্ষোভে বসেন বিজেপির নেতাকর্মীরা। যুবমোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্যর দাবি, পুলিশের পার্টি অফিসে পরিণত হয়েছে। তিন জনপ্রতিনিধির অভিযোগ নিতে চাইছে না। অভদ্র আচরণ করেছে। ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে। আমরা সংসদে বিষয়টি তুলব। দেখাব মোদি সরকারের কত ক্ষমতা।

এদিকে, বৃহস্পতিবারের ঘটনায় বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে  হেস্টিংস থানার পুলিশ। সেই এফআইআর-এ নাম রয়েছে, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ, বিজেপির সহ সভাপতি মুকুল রায়, বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার, ভারতী ঘোষ-সহ অন্যদের।


তাঁদের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানো, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, পুলিশের কাজে বাধা, পুলিশকে মারধর সহ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে মামলা করা হয়েছে।  এছাড়া হাওড়া ময়দান থানায় বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, নিশীথ প্রামাণিক এবং যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্যর বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে।


যেখানে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের পাশাপাশি খুনের চেষ্টার ধারাও রয়েছে। উত্তর বন্দর থানাতেও অজ্ঞাত পরিচয় বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে।  এনিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল।


বৃহস্পতিবারের কর্মসূচিতে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করলেও, এনিয়ে বিজেপিকেও খোঁচা দিতে ছাড়েনি সিপিএম-কংগ্রেস। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, রাজ্যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে স্পেস দেওয়া উচিত। তবে ৯ এমএম নিয়ে মিছিল শুভ ইঙ্গিত নয়। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, বিজেপি শক্তি প্রদর্শন করছে, দিদি পালাচ্ছেন। বিজেপিকে এনেছে দিদি-ই।


এদিকে, তাদের কর্মসূচিতে পুলিশি হামলা, মিথ্যা মামলা দেওয়ার প্রতিবাদে আজ ফের পথে নামল বিজেপি। কলকাতায় দলের সদর দফতর থেকে মেয়ো রোড পর্যন্ত মোমবাতি হাতে মৌন মিছিল। এদিনের মিছিল থেকেও পুলিশের বিরুদ্ধে সুর চড়ান দিলীপ ঘোষ।