কলকাতা : নারদ মামলা নিয়ে ফের সরগরম রাজ্য রাজনীতি। "কাউকে ধরব, কাউকে ছাড়ব-সিবিআই এই নীতি গ্রহণ করতে পারে না।" তৃণমূলের তিন নেতা-মন্ত্রী ও কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারি প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। 


প্রসঙ্গত, এই মামলায় একই অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতার করা হয়নি। এনিয়ে তৃণমূলের প্রশ্ন, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্যই কি তাঁদের ছাড় দেওয়া হয়েছে। 


আজ সকালে নারদ-মামলায় ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে আসা হয় নিজাম প্যালেসে। সেখানেই তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় অ্যারেস্ট মেমো। তাতে সই করানো হয় চার নেতা-মন্ত্রীকে। উল্লেখ্য, নারদ মামলায় যখন শুরু হয় সেই সময় তালিকায় ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়দের পাশাপাশি নাম ছিল মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীদের। সেই সময় এঁরা দু'জন তৃণমূলে ছিলেন। পরবর্তীকালে, দু'জনই বিজেপিতে যোগ দেন। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার ফলেই কি মুকুল-শুভেন্দুকে গ্রেফতার করা হল না ?


একই প্রশ্ন তুলেছেন অধীর চৌধুরীও। তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে নারদ কাণ্ডে সিবিআই চারজন প্রাক্তন এবং বর্তমান মন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে। আমার বক্তব্য, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার যেন বাংলার কেউ না হন। কাউকে ধরব, কাউকে ছাড়ব-সিবিআই এই নীতি গ্রহণ করতে পারে না।" তিনি আরও বলেন, "নারদ কাণ্ড, সারদা কাণ্ড এই বাংলার বহু পরিচিত ঘটনা। সারা বাংলা করোনা আবহে আক্রান্ত। মানুষের মধ্যে ত্রাহি ত্রাহি রব। মানুষ আজ দিশেহারা। এই অবস্থায় গ্রেফতার করাটা কি সমীচিন হয়েছে ? এই প্রশ্ন আমি সিবিআইকে অবশ্যই করব।" 


উল্লেখ্য, শুভেন্দু দলে যোগ দেওয়ার পর নিজেদের ইউটিউব চ্যানেল থেকে নারদ ঘটনার ভিডিও ডিলিট করে দেয় বিজেপি। তৃণমূল তখন দাবি করেছিল যে, সিবিআই থেকে বাঁচতেই শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এবার রাজ্যে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতারিতে প্রতিহিংসামূলক আচরণের অভিযোগে উঠেছে। যদিও সিবিআই সূত্রে যুক্তি, এই মামলায় অভিযুক্তর বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়েরের জন্য লোকসভা অধ্যক্ষর অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই অনুমতি এখনও পৌঁছায়নি। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে, মুকুল রায় রাজ্যসভার সাংসদ। সেক্ষেত্রে কি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের অনুমতি চেয়েছে? সূত্রের যেটা খবর, এমন কোনও অনুমতি চাওয়া হয়নি। কারণ, মুকুলের বিরুদ্ধে তেমন কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।