কলকাতা: নারদ-মামলায় গ্রেফতার ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়। নিজাম প্যালেসে তুলে নিয়ে গিয়ে অ্যারেস্ট মেমোতে সই করানো হয় তৃণমূল কংগ্রেসের চার নেতা-মন্ত্রীকে। সূত্রের খবর, রাজ্যপালের কাছ থেকে অনুমতি মেলার পর নারদকাণ্ডে চার অভিযুক্ত নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আজ আদালতে চার্জশিট পেশ করবে সিবিআই। পাশাপাশি, এই চারজনকেও আদালতে পেশ করা হবে। নারদকাণ্ডে আরেক অভিযুক্ত সাসপেন্ডেড আইপিএস অফিসার এসএমএইচ মির্জার বিরুদ্ধেও আদালতে চার্জশিট পেশ করবে সিবিআই। খবর সূত্রের।


এরইমধ্যে তৃণমূল এই মামলায় তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক আচরণের অভিযোগে সরব হয়েছে।  তৃণমূলের প্রশ্ন, নারদ-মামলায় একই অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন গ্রেফতার নয় মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী? বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্যই কি ছাড়? 


উল্লেখ্য, মুকুল রায় আগেই তৃণমূল ছেড়েছেন। সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনের আগে মেদিনীপুরে অমিত শাহর সভায় গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।  নারদ স্টিং অপারেশন মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত শুভেন্দু দলে যোগ দেওয়ার পর নিজেদের ইউটিউব চ্যানেল থেকে ওই ঘটনার ভিডিও ডিলিট করে দেয় বিজেপি। এই ঘটনায় বিরোধীরা কটাক্ষ করেছিল বিরোধীরা। তৃণমূল তখন দাবি করেছিল যে,কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই থেকে বাঁচতেই শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।  এবার রাজ্যে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের এই মামলায় গ্রেফতারের পর প্রতিহিংসামূলক আচরণের অভিযোগে উঠেছে তৃণমূলের অন্দরে।


যদিও সিবিআই সূত্রে যুক্তি, এই মামলায় অভিযুক্তর বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়েরের জন্য লোকসভা অধ্যক্ষর অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই অনুমতি এখনও পৌঁছয়নি। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে, মুকুল রায় রাজ্যসভা সাংসদ। সেক্ষেত্রে কি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের অনুমতি চেয়েছে। সূত্রের যেটা খবর, এমন কোনও অনুমতি চাওয়া হয়নি। কারণ, মুকুলের বিরুদ্ধে তেমন কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। আর এই সূত্রেই তৃণমূল প্রতিহিংসামূলক আচরণের অভিযোগ আরও জোরাল করেছে।


আজ সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে পৌঁছে যান সিবিআই অফিসাররা। এরপর গাড়িতে করে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয় ফিরহাদ হাকিমকে।  বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, বিনা নোটিসে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, আদালতে মোকাবিলা হবে। তাঁকে নিয়ে যাওয়ার সময়, বাড়ির বাইরে তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে বাহিনীর বচসা শুরু হয়। প্রথমে রাস্তায় শুয়ে পড়েন তৃণমূল কর্মীরা। এরপর স্লোগান দিয়ে মন্ত্রীর বাড়ির সামনে পথ অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। শেষে মন্ত্রীর অনুরোধে রাস্তা ছেড়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। এর পাশাপাশি, আজ সকালে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে নিয়ে আসা হয় মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও।