নয়াদিল্লি: মধ্যবিত্তদের জন্য করছাড়ের ঘোষণার পর সংসদে ভাষণ। আর তাতে বিরোধীদের একহাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিশেষ করে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন তিনি। তাঁর দাবি, একসময় দেশ জুড়ে ‘গরিবি হটাও’ স্লোগান শোনা গেলেই, তাঁর সরকারেই ২৫ কোটি ভারতীয়কে দারিদ্র থেকে মুক্তি দিয়েছে।
চলতি বাজেট অধিবেশনে মঙ্গলবার সংসদে বক্তৃতা করেন মোদি। সেখানে ইন্দিরা গাঁধর প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেসকে খোঁচা দেন তিনি। বলেন, “গত পাঁচ দশক ধরে গরিবি হটাও স্লোগান শুনে এসেছি আমরা। এখন আমরা ২৫ কোটিকে দারিদ্র থেকে তুলে এনেছি।”
তাঁর সরকারের কৃতিত্ব তুলে ধরতে গিয়েও বিরোধীদের নিশানা করেব মোদি। একদিন আগে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গাঁধী ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র ব্যর্থতা নিয়ে সরকারকে নিশানা করেন। আজ জবাব দিতে গিয়ে মোদি বলেন, “আমরা গরিব মানুষের জন্য কী করেছি, তা রাষ্ট্রপতি নিজের ভাষণে বলেছেন। যাঁরা কুঁড়েঘরে গিয়ে ছবি তোলেন, গরিব মানুষকে নিয়ে আলোচনা হলে তাঁদের একঘেয়ে লাগে।”
মোদির দাবি, কিছু নেতা ‘জাকুজি’, আধুনিক শাওয়ারকে প্রাধান্য দেন। তাঁর সরকার প্রত্যেক ঘরে জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়াকে গুরুত্ব দিয়েছে। ১২ কোটি পরিবারের কাছে পানীয় জল পৌঁছে দিয়েছে তাঁর সরকার। একসময় তাঁর “স্বচ্ছতা‘ অভিযানকেও কটাক্ষ করা হতো বলে মন্তব্য করেন মোদি।
বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে ১০ কোটি ভুয়ো সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করে বাদ দেওয়া থেকে মানুষের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিয়ে তাঁর সরকার নজির গড়েছে বলে জানান মোদি। তাঁর কথায়, “আমাদের নীতি হল, ‘বচত ভি, বিকাশ ভি’ (সঞ্চয়ও, উন্নয়নও)। মানুষের পয়সা, মানুষেরই কাজে ব্যবহার। সরাসরি মানুষের কাছে সুবিধা পৌঁছে দিয়েছি আমরা। সরাসরি মানুষের অ্যাকাউন্টে ৪০ লক্ষ কোটি টাকা জমা করেছি।”
এদিন রাজীব গাঁধীকেও নিশানা করতে ছাড়েননি মোদি। তিনি বলেন, “একসময় প্রধানমন্ত্রীকে মিস্টার ক্লিন বলার চল ছিল। কিন্তু তিনি বলেছিলেন, দিল্লি থেকে ১ টাকা পাঠানো হলেও, মানুষের কাছে পৌঁছত ১৫ পয়সা। ঘরে ঘরে জল পৌঁছে যাওয়ায়, রোগভোগে খরচ হওয়া কোটি কোটি টাকা সঞ্চয় করতে পেরেছেন মানুষ।”
রাজীবকে নিশানা করে মোদি আরও বলেন, “একজন প্রধানমন্ত্রীর মুখে ঘন ঘন ২১ শতকের কথা শোনা যেত। আর কে লক্ষ্মণ ভাল একটি কার্টুন এঁকেছিলেন, তাতে দেখা যায়, বিমানে বসে রয়েছেন পাইলট। বিমানটি ঠেলাগাড়ির উপর বসানো, যাকে ঠেলছেন শ্রমিকরা। তার গায়ে লেখা ছিল ২১ শতক।” মানুষের টাকায় শিশমহল গড়ার পক্ষপাতী নন বলেও মন্তব্য করেন মোদি। অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে নিশানা করেই এমন মন্তব্য বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এবারের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ‘শিশমহল’ বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন সাজান বলে অভিযোগ।