কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও আবির দত্ত, কলকাতা: একুশের বিধানসভা ভোটের আগে প্রতি মাসে রাজ্যে আসবেন নরেন্দ্র মোদি। একথা জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি আজ জানান, ফেব্রুয়ারিতে আসছেন, প্রতি মাসেই প্রধানমন্ত্রী আসবেন, যদিও ডেট ঠিক হয়নি। বঙ্গ বিজয়ের নীল-নকশা চূড়ান্ত করতে অরবিন্দ মেনন, অমিত মালব্য, সুনীল দেওধরের মতো এক ঝাঁক কেন্দ্রীয় স্তরের নেতাকে বাংলার ময়দানে নামিয়েছে বিজেপি। পাশাপাশি লাগাতার রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ এবং জে পি নাড্ডা। একজন বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি, দ্বিতীয়জন বর্তমান সভাপতি। রাজ্য়ের ক্ষমতাসীন দলের চাপ ক্রমাগতঃ বাড়িয়ে চলার কৌশলের প্রেক্ষাপটেই অনুসারে দিলীপবাবু জানিয়েছেন, একুশের মহাযুদ্ধের সুর বেঁধে দিতে ময়দানে নামবেন খোদ নরেন্দ্র মোদি। বিধানসভা ভোটের আগে ঘন ঘন বাংলা সফরে আসবেন তিনি।
যথারীতি এই নিয়ে বিজেপির দিকে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা প্রতিদিন রাজ্যে এলেও বিশেষ কোনও লাভ হবে না বলে কটাক্ষ করে তিনি বলেছেন,ডেলি আসুক, ওঁর কোনও কাজ নেই সেটা বোঝা যায়, পিএম হিসেবে আসবেন না বিজেপি নেতা হিসেবে আসবেন?
গত লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে রাজ্যের ২৯৪টি আসনের মধ্যে ১৬৪টিতে এগিয়ে আছে তৃণমূল। ১২১টি-তে এগিয়ে বিজেপি। বাদবাকি ৯টি আসনে কংগ্রেস এগিয়ে। এই পরিস্থিতিতে একুশের বিধানসভা নির্বাচন জেতার জন্য পূর্ণশক্তিতে ঝাঁপিয়েছে বিজেপি। দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা রাজ্য চষে বেড়াচ্ছেন। তেমনই লাগাতার বাংলায় আসছেন শাহ, নাড্ডা। গত ৫ নভেম্বর বাঁকুড়ায় যান শাহ, যে বাঁকুড়ায় গত লোকসভা নির্বাচনে ২টি আসনেই জয় পায় বিজেপি। গত ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে সভা করেন শাহ। সেই সভায় তৃণমূলের হেভিওয়েট শুভেন্দু অধিকারী-সহ ১০ জন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেন।
সূত্রের খবর, আগামী ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকীর দিন কলকাতায় আসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ১৩ ও ১৪ জানুয়ারিও বাংলায় থাকবেন তিনি। হাওড়ায় সভা করবেন। অন্যদিকে, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি হওয়ার পর ১৯ অক্টোবর উত্তরবঙ্গে সাংগঠনিক সভা করেন নাড্ডা। গত ১০ ডিসেম্বর তিনি যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী কেন্দ্র ডায়মন্ডহারবারে। সেদিন শিরাকোলে নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য-রাজনীতি। এই প্রেক্ষাপটেই ভোটের আগে প্রতি মাসে মোদির বঙ্গ সফরের কথা জানিয়ে দিলীপবাবু বুঝিয়ে দিলেন, ভয়ঙ্কর যুদ্ধ অপেক্ষা করছে শাসক দলের জন্য।