অযোধ্যা-মামলা: কাল রায় ঘোষণা সুপ্রিম কোর্টের, 'ফয়সলা যে দিকেই যাক, কারও হার-জিত হবে না', টুইট প্রধানমন্ত্রীর

শুক্রবার, আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার হাল-হকিকৎ খতিয়ে দেখতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব রাজেন্দ্র কুমার তিওয়ারি ও রাজ্য পুলিশের ডিজি ওমপ্রকাশ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।

ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ Last Updated: 08 Nov 2019 11:41 PM
রায়ের কয়েক ঘণ্টা আগে টুইট করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লিখলেন-- অযোধ্যায় কাল রায়দান। বিগত কয়েক মাস ধরে এই মামলায় নিরন্তর শুনানি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সারা দেশ উৎসাহের সঙ্গে সেই দিকে তাকিয়ে ছিল। এই সময়ে সমাজের প্রত্যেক স্তরে সকলের জন্য সম্প্রীতি বজায় রাখাটা জরুরি। দেশের বিচারব্যবস্থার সম্মান অটূট রাখতে সমাজের সকল পক্ষ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, সব দল যে ভাবে বিগত দিনে সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং ইতিবাচক পরিবেশ বজায় রাখার প্রয়াস করেছেন, তা প্রশংসনীয়। আদালতের রায়ের পরও, এই সম্প্রীতি বজায় রাখাটা জরুরি। এটা মনে রাখতে হবে, আদালতের রায় যে পক্ষেই যাক না কেন, কারও হার বা জয় হবে না। দেশবাসীর প্রতি আমার আহ্বান, আমাদের সকলের প্রাথমিক দায়িত্ব হবে, যাতে এই রায় ভারতের শান্তি, একতা ও সদ্ভাবনার পরম্পরাকে জোরদার করবে।
প্রায় ১৩৪ বছর ধরে চলছে অযোধ্যা নিয়ে আইনি লড়াই। এক নজরে অযোধ্যা মামলার কালপঞ্জী--



১৮৮৫ সালে ফৈজাবাদের জেলা আদালতে, রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদের বিতর্কিত কাঠামোর বাইরে শামিয়ানা তৈরি করে রামলালার মূর্তি স্থাপনের আবেদন জানান মহন্ত রঘুবীর দাস।

আর্জি খারিজ করে দেয় ব্রিটিশ আদালত।

১৯৫০ সালে ফৈজাবাদ আদালতে মামলা করে বিতর্কিত স্থানে রামলালার পুজোর অনুমতি চান দুই ব্যক্তি

১৯৫৯ সালে বিতর্কিত জমির মালিকানা দাবি করে নির্মোহী আখড়া

১৯৮১ সালে বিতর্কিত জমির মালিকানা দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হয় উত্তরপ্রদেশের সেন্ট্রাল সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড

১৯৮৬ সালে বিতর্কিত কাঠামোর দরজা পুজোর জন্য খুলে দিতে নির্দেশ দেয় ফৈজাবাদ আদালত

১৯৮৯ সালে বিতর্কিত জমিতে স্থিতবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেয় ইলাহাবাদ আদালত

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়

১৯৯৩ সালে সংসদে আইন পাস করে অযোধ্যার বিতর্কিত জমির দখল নেয় কেন্দ্রীয় সরকার

২০১০ সালে অযোধ্যার বিতর্কিত জমি নিয়ে রায় দেয় ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়, জমির তিনভাগ করে রাম লালা, ইসলামিক ওয়াকফ বোর্ড এবং নির্মোহী আখড়ার মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হোক। কিন্তু, এই রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে যায় তিন পক্ষই।

২০১১ সালে হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

২০১৭ সালে ৭ অগাস্ট অযোধ্যা মামলার শুনানির জন্য ৩ বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করে সুপ্রিম কোর্ট

২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এস আব্দুল নাজিরের বেঞ্চে নতুন করে মামলার শুনানি শুরু হয়

২০১৮ সালের ২৯ অগাস্ট নতুন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে ফের নতুন করে তিন সদস্যের বেঞ্চ গঠত হয়

২০১৯ সালের ৮ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে নতুন করে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ তৈরি হয়

৬ অগাস্ট থেকে প্রতিদিন অযোধ্যা মামলার শুনানি শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টে

১৬ অক্টোবর অবশেষে শেষ হয় শুনানি।
কাল সকাল সাড়ে দশটায় অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্ট। এই উপলক্ষ্যে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে অযোধ্যাকে। রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে পুলিশ।
ইতিমধ্যেই চার হাজার আধা সেনা অযোধ্যায় পাঠিয়েছে কেন্দ্র। র‍্যাফ এবং বম্ব ডিজপোজাল স্কোয়াডও তৈরি রয়েছে। অযোধ্যার সমস্ত হোটেল, গেস্ট হাউস এবং লজের ওপরও নজর রাখছে কেন্দ্র। অযোধ্যার অলিগলিতে নজরদারির জন্য সাহায্য নেওয়া হচ্ছে ড্রোনের।
বিতর্কিত ভূমির আশেপাশে ব্যারিকেড করে দিয়েছে পুলিশ। প্রত্যেকের গতিবিধির ওপর নজর রেখে চলেছে প্রশাসন। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে আজ থেকে আগামী ৩দিন অযোধ্যার সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
কালই বের হচ্ছে অযোধ্যা মামলার রায়। কাল সকাল সাড়ে ১০টায় রায় দেবে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এস এ বোবদে, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এস এ নাজিরের সাংবিধানিক বেঞ্চ মামলার রায় ঘোষণা করবে। মামলার প্রধান তিন পক্ষ হল -- নির্মোহী আখড়া, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এবং রামলালা।
শুধুমাত্র এই মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিদেরই আদালত কক্ষে উপস্থিত থাকার অনুমতি রয়েছে।

প্রেক্ষাপট

নয়াদিল্লি: শনিবারই অযোধ্যা-মামলার রায়। আগামীকাল সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ অযোধ্যা মামলার রায় দেবে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। খবর সংবাদসংস্থা সূত্রে।






 


 


 


আগামীকাল, শনিবারই সম্ভবত হতে চলেছে বহু-প্রতিক্ষীত অযোধ্যা-মামলার রায়দান। তার আগে শুক্রবার, আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার হাল-হকিকৎ খতিয়ে দেখতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব রাজেন্দ্র কুমার তিওয়ারি ও রাজ্য পুলিশের ডিজি ওমপ্রকাশ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।
খবরে প্রকাশ, এদিন রাজ্যের দুই শীর্ষ আধিকারিককে সুপ্রিম কোর্টের নিজ চেম্বারে ডেকে পাঠান গগৈ। সেখানে প্রধান বিচারপতিকে সুরক্ষা বন্দোবস্তের বিস্তারিত ব্লু-প্রিন্ট পেশ করেন মুখ্যসচিব ও ডিজি। একইসঙ্গে আশ্বাস দেন, যে কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে প্রস্তুত পুলিশ-প্রশাসন।
জানা গিয়েছে, বৈঠক চলে প্রায় এক-ঘণ্টা। সেখানে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, রাজ্যের কোথাও যাতে কোনওপ্রকার অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে যথোপযুক্ত ব্যবস্থাগ্রহণ নিতে। ইতিমধ্যেই, অযোধ্যা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। আগামী ১০ তারিখ পর্যন্ত অযোধ্যায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সমস্ত জেলার জেলাশাসক ও শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি নির্দেশ দেন, যারা শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণ করতে। সকল আধিকারিকদের অত্যন্ত সতর্ক ও সজাগ থাকারও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
অগাস্ট ও অক্টোবরের মধ্যে প্রায় ৪০ দিন ধরে প্রতিদিন অযোধ্যা-মামলার শুনানি হয়েছে শীর্ষ আদালতে। এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায়ে বলেছিল-- ২.৭৭ একর জমি সমভাগে রামলাল্লা, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড ও নির্মোহী আখাড়ার মধ্যে ভাগ করতে। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করা হয় সুপ্রিম কোর্টে।

- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -

TRENDING NOW

© Copyright@2024.ABP Network Private Limited. All rights reserved.