নয়াদিল্লি: কর ফাঁকি রুখতে অভিনব উদ্যোগ আয়কর দফতরের!


আয়কর ফাঁকি দিলে ব্লক করা হতে পারে প্যান কার্ড। বাতিল হয়ে যেতে পারে ভর্তুকিপ্রাপ্ত রান্নার গ্যাসের সংযোগ। আয়কর ফাঁকি দেওয়া ব্যক্তি যাতে কোনও ব্যাঙ্কঋণ না পান, ব্যবস্থা করা হবে তারও। শুধু তাই নয়, ইচ্ছাকৃতভাবে আয়কর ফাঁকি দিলে হতে পারে গ্রেফতারি। চলতি আর্থিক বছর থেকেই কড়া পদক্ষেপের ভাবনা আয়কর দফতরের।

গত সপ্তাহেই আয়কর আধিকারিকদের এক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের মোট করদাতাদের সংখ্যা দ্বিগুণ করার ‘টার্গেট’ বেঁধে দিয়েছেন বলে শোনা যায়। প্রধানমন্ত্রীর কথাকে মান্যতা দিয়ে কর-আদায় করার এই কঠোর পদক্ষেপ ঘোষণা করল আয়কর দফতর।

নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, যাঁরা কর ফাঁকি দেবেন, তাঁদের প্যান কার্ড এমনভাবে ব্লক করা হবে যাতে তাঁরা কোনওমতে ঋণ ও ওভার ড্রাফটের সুবিধা না পান। একইসঙ্গে, ওই প্যান কার্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকা ভর্তুকিপ্রাপ্ত রান্নার গ্যাসের সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হবে।

জানা গিয়েছে, ওই প্যান কার্ডগুলিকে রেজিস্ট্রার অফ প্রপার্টিজ-এর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে, যাতে ওই কার্ড নম্বরের ওপর কোনও প্রকার স্থাবর সম্পত্তির নিবন্ধীকরণ না করতে পারেন।

নির্দেশিকা অনুযায়ী, কর ফাঁকিদাতাদের নাম খুঁজতে ‘সিবিল’-এর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে পারে আয়কর দফতর। সিবিল হল এমন একটি সংস্থা, যারা যে কোনও ব্যক্তির নামে কোনও ঋণ আছে কি না, বা অতীতে ঋণের পরিমাণ কত, কী কারণে কত ঋণ নেওয়া হয়েছে তার হিসেব রাখে। আয়কর দফতর এখন সেই নথি দেখে কর-ফাঁকিদাতাদের স্থাবর সম্পত্তিকে বাজেয়াপ্ত করার রাস্তা বের করতে চাইছে।

এখানেই শেষ নয়। ইচ্ছাকৃতভাবে কর-ফাঁকি দিলে হতে পারে হাজতবাসও। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আটক বা গ্রেফতার করতে পারে আয়কর দফতর। এমন ক্ষমতাও দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। বলা হয়েছে, এধরনের অপরাধীদের আয়কর আইনের ২৭৬সি(২) ধারায় অভিযুক্ত করা হবে। এক্ষেত্রে অভিযুক্তের তিন মাস থেকে তিন বছর পর্যন্ত হাজতবাস হতে পারে।

প্রসঙ্গত, গত আর্থিক বছর থেকেই বিপুল অঙ্কের কর ফাঁকি দিয়েছেন যাঁরা, তাঁদের নাম সংবাদপত্র ও সংস্থার ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত ৬৭ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে, যাঁদের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার ওপর কর অনাদায়ের অভিযোগ রয়েছে। এবছর থেকে সেই পরিমাণ ১ কোটিতে নামিয়ে আনা হবে বলে জানা গিয়েছে। এর ফলে, বেশি সংখ্যক কর-ফাঁকিদাতাদের নাম প্রকাশ্যে আসবে।