নয়াদিল্লি: ফৈয়জ আহমেদের কবিতা নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে এবার সরব হলেন কবির কন্যা সালিমা হাসমি। “দুঃখ হয়নি, বরং হাসি পাচ্ছে, ‘হম দেখেঙ্গে’ কবিতাকে হিন্দু-বিরোধী বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক দল মানুষ এই কবিতা নিয়ে তদন্তে করছে, এটা দুঃখের নয়, বরং হাসির। তাঁরা আবার না উর্দু কবিতা ও তার রূপকের অনুরাগী হয়ে যায়। ফৈয়জের কবি প্রতিভাকে খাটো করে দেখবেন না,” বক্তব্য সালিমা হাসিমের। তিনি খুশি, কবরে থেকে মানুষের হয়ে কথা বলছেন তাঁর বাবা।


১৯৭৯ সালে পাকিস্তানের জিয়া-উল-হকের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে কলম তুলে কবি লিখেছিলেন ‘হম দেখেঙ্গে’


‘জব আর্জ-এ-খুদা কে কাবে সে


সব বুত উঠাওয়ায়ে জায়েঙ্গে


সব তখত গিরায়ে জায়েঙ্গে


বস নাম রহেগা আল্লা কা...’।


শাসকের পতনের স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল ‘হম দেখেঙ্গে’ কবিতার এই পংক্তিগুলোতে। চার দশক পর আবার ফৈয়জের সেই পংক্তিই আবার ঝড় তুলল জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জিকরণের প্রতিবাদে সরব পড়ুয়ারা ক্যাম্পাসেই এই কবিতা সুর করে গেয়েছেন এবং আবৃতি করেছেন। আর এতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। অবিভক্ত ভারতের পঞ্জাবে জন্মগ্রহণ করা ফৈয়াজের কবিতা নাকি ‘হিন্দু বিরোধী’। কেবল অভিযোগই নয়, ‘লেনিন শান্তি পুরস্কার জয়ী’, নোবেলের জন্য মনোনীত এই কবির কবিতার ময়নাতদন্ত করছে আইআইটি। যা দেখে হতবাক, বিস্মিত এবং একই সঙ্গে ক্রোধান্বিত গুলজার। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “যে কবি প্রগতিশীল লেখক আন্দোলনের জনক, তাঁকে এভাবে ধর্মের সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়া অনুচিত”। ফৈয়জের কবিতাকে ভুল দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা হচ্ছে। কবির সৃষ্টিকে সৎ উদ্দেশেই দেখা উচিত বলে মনে করেন গুলজার। একই কথা জাভেদ আখতারেরও। তিনি বলেন, “ফৈয়জের ‘হম দেখেঙ্গে’ কবিতাকে ‘হিন্দু বিরোধী’ বলা একেবারে হাস্যকর”।


যদিও ভারতে এই ঘটনা প্রথম নয়। অতীতে জেএনইউ-তে ‘আজাদির’ স্লোগানে ছাত্রনেতার গায়ে সেটে দেওয়া হয়েছে দেশদ্রোহীর তকমা। আর এবার ‘হিন্দু বিরোধী’ অভিযোগে ময়নাতদন্তের টেবিলে ফৈয়জ আহমেদ ফৈয়জের কবিতা ‘হম দেখেঙ্গে’।