নয়াদিল্লি: পথ দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় নয়া প্রকল্প আনার পথে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। পথ দুর্ঘটনায় কেউ আহত হলে, এক সপ্তাহ তাঁর চিকিৎসা চালাবে কেন্দ্র। চিকিৎসার খরচবাবদ সর্বোচ্চ ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করা হবে এই প্রকল্পের আওতায়। তবে আহত ব্যক্তির হাতে ওই টাকা দেওয়া হবে না। চিকিৎসা হবে ক্যাশলেস অর্থাৎ নগদহীন প্রক্রিয়ায়। চলতি বছরের মার্চ মাসের মধ্যেই নয়া এই প্রকল্পের সূচনা হবে বলে জানালেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকরী। (Nitin Gadkari)


পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা বেড়েই চলেছে দেশে। সেই কথা মাথায় রেখেই নয়া প্রকল্প আনছে কেন্দ্র। নিতিন জানিয়েছেন, পথ দুর্ঘটনা রুখতে একাধিক পদক্ষেপ করছে সরকার। গাড়ির চালকদের যাতে বেশি ক্ষণ খাটতে না হয়, ক্লান্তি, অবসন্নতা যাতে তাঁদের কাবু করে না ফেলে, তার জন্যও নীতি নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাঁদের দিয়ে আট ঘণ্টার বেশি গাড়ি চালানো যাবে না। এর জন্য আধার নম্বর সম্বলিত নয়া প্রযুক্তি আনা হবে, যাতে চালকরা কত ঘণ্টা গাড়ি চালাচ্ছেন, তা বোঝা সম্ভব হবে। পাশাপাশি, দুর্ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানও সরকারের লক্ষ্য। তাই নয়া প্রকল্প আনা হচ্ছে। দুর্ঘটনাগ্রস্তদের প্রাণ বাঁচানোর ক্ষেত্রে পুরস্কারের অঙ্কও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন নিতিন। বর্তমানে দুর্ঘটনায় প্রাণ বাঁচানো ব্যক্তিকে ৫০০০ টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়। (Road Accident Cashless Treatment)


২০২৪ সালের ১৪ মার্চ পঞ্জাবে পরীক্ষামূলক ভাবে এই প্রকল্প কার্যকর করা হয়। আরও ছয় রাজ্যেও পরীক্ষানিরীক্ষা চলে। সব শেষে গোটা দেশের জন্য প্রকল্পটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পথ দুর্ঘটনায় আহতদের ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশলেস চিকিৎসা করাবে কেন্দ্র। ন্যাশনাল হেলথ অথরিটি (NHA) এই প্রকল্প কার্যকর করবে। পুলিশ, হাসপাতাল এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবে NHA. গোটা প্রকল্পটি প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে। সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের কাছে দুর্ঘটনার রিপোর্ট থাকবে, থাকবে চিকিৎসা খাতে লেনদেনের তথ্যও।


জাতীয় সড়ক থেকে হাইওয়ে, যে কোনও রাস্তায় মোটরযান দুর্ঘটনায় পড়লেই, আহতরা এই চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন বলে জানিয়েছেন নিতিন। তিনি জানিয়েছেন, ২০২২ সালে ট্রাকের ধাক্কায় ৩৩ হাজার মানুষ মারা যান। পরীক্ষামূলক ভাবে প্রকল্পটি কার্যকর করার পর এখনও পর্যন্ত ৬ হাজার ৮৪০ জন মানুষ উপকৃত হয়েছেন। অসম, চণ্ডীগড়, পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, পুদুচ্চেরী, হরিয়ানায় সাফল্য পেয়েছে প্রকল্পটি। 


এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা পরিষেবার মাধ্যমে বছরে ৫০ হাজার মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে বলে আশাবাদী নিতিন। এর আগে নিতিন জানিয়েছিলেন. ২০২৩ সালে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ১.৭২ লক্ষ মানুষের। ২০২২ সালে পথ দুর্ঘটনায় যত মানুষ মারা যান, ২০২৩ সালে তার চেয়ে ৪.২ শতাংশ বেশি মানুষ মারা যান।