নয়াদিল্লি : বিরোধী জোটকে কি ভয় খেতে শুরু করেছে বিজেপি ? NDA-র বৈঠকের আগে এমনই প্রশ্ন তুলেছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তাদের মতে, গত কয়েক বছরে দেশজুড়ে প্রচুর শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপি। যার জেরে 'NDA' টার্মটিই কার্যত ফিকে হতে বসেছিল। অর্থাৎ, একাই একশো হয়ে উঠেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু, বিভিন্ন রাজ্যের পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে। সম্প্রতি কর্ণাটকে ক্ষমতা দখল করেছে কংগ্রেস। যে ধাক্কা বিজেপি কাটিয়ে ওঠার আগেই এককাট্টা বিরোধীরা। স্বাভাবিকভাবেই '২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে চাপ বাড়ছে গেরুয়া শিবিরের উপর। এই পরিস্থিতিতে আজ বৈঠকে NDA-ও। আর সেই মেগা বৈঠকের আগে ট্যুইট করে NDA-র একতার কথা তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী। ট্যুইটারে মোদি (PM Modi) লিখলেন, "এটা খুব আনন্দের বিষয় যে, গোটা দেশ থেকে NDA-তে আমাদের মূল্যবান শরিকরা বৈঠকে বসছেন। আমাদের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত জোট। যা জাতীয় স্তরে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে যাতে আঞ্চলিক স্তরের আশা-আকঙ্খাগুলি পূরণ করা যায়।"  


 






বেঙ্গালুরুতে বৈঠক শেষে কার্যত এককাট্টা বিরোধীরা। বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ে নতুন জোটের নামও চূড়ান্ত হয়ে গেছে। I-N-D-I-A বা ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স নামে লড়বে তারা। বৈঠক শেষে বিরোধীদের বক্তব্যেও উচ্ছ্বাস ধরা পড়েছে। অর্থাৎ, নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন দূরত্ব সরিয়ে রেখে সামনের লোকসভা ভোটে গেরুয়া শিবিরকে বেগ দিতে প্রস্তুত হচ্ছে ২৬টি রাজনৈতিক দল।


এই পরিস্থিতিতে আজ ৩৮টি জোট শরিককে নিয়ে রাজধানীর বুকে বৈঠকের আয়োজন করেছে বিজেপিও। আজ সন্ধেয় যে বৈঠক শুরু হয়েছে। তবে, NDA-এর এই দলগুলির অধিকাংশই ছোট ছোট শরিকদল। যাদের খুব অল্প এলাকার মধ্যে প্রভাব রয়েছে। কোনও কোনও দলের গুটিকয়েক সাংসদ রয়েছে, আবার কারও কারও তাও নেই। রাজনৈতিক মহল বলছে, এই ছোট দলগুলির অনেকেই আশা করছে, হয়তো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়ে তারা পরের বছর লোকসভা ভোটের আসন সমঝোতা করে নিতে সক্ষম হবে। যদিও এই ভাবনা কতটা সঠিক তা সময় বলবে। 


কিন্তু, পরিকল্পনা করে এগোচ্ছে বিজেপি। উত্তর ভারতের অধিকাংশ রাজ্যেই ক্ষমতাশালী তারা। কিন্তু, দেশের দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিতেও তারা ক্ষমতার বিস্তার ঘটাতে চাইছে। যেমন- উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে গেরুয়া শিবিরের। এখানে সমমনোভাবাপন্ন অন্যান্য দলগুলির সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে চাঙ্গা করে বিভিন্ন শ্রেণির ভোটব্যাঙ্ককে নিশ্চিত করতে চাইছে তারা। বিশেষ করে পিছিয়েপড়া এবং এসসি-এসটি ভোটব্যাঙ্ক। যদিও বিহারে বৃহত্তর জোটে সব রাজনৈতিক দলগুলিকে ইতিমধ্যেই এক জায়গায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন নীতিশ কুমার। শুধুমাত্র লোক জনশক্তি পার্টিকে বিজেপির সঙ্গে জোটের জন্য ছেড়ে রেখে। অন্যদিকে, দক্ষিণে অভিনেতা পবন কল্যাণের জন সেনা ও কেরল কংগ্রেস (থমাস)-কে টানতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে পরের বছর লোকসভা ভোটের আগে আজ মুখোমুখি বৈঠকে NDA-র শরিক দলগুলি।