গুয়াহাটি: স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর নেওয়া যাবতীয় নীতি, দিল্লির শিখ বিরোধী দাঙ্গা, নারী সশক্তিকরণ, সংখ্যালঘু অধিকারের মত বেশ কিছু বিষয় বাদ পড়েছে অসমের দ্বাদশ শ্রেণির সিলেবাস থেকে। রাজ্যের শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক দাবি করেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের ওপর থেকে পড়াশোনার চাপ কমাতে এই সিদ্ধান্ত।


অসম হায়ার সেকেন্ডারি এডুকেশন কাউন্সিল ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সিলেবাস থেকে বাদ দিয়েছে এই বিষয়গুলি। কাউন্সিলের সচিব মনোরঞ্জন কাকাতি জানিয়েছেন, সিলেবাস ৩০ শতাংশ কমানো হয়েছে, এর মূল কারণ হল, ২০২০-২১ সেশনের পড়ুয়াদের ওপর থেকে পড়ার চাপ কমানো। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বাদ পড়েছে দেশ গঠনে নেহরুর দৃষ্টিভঙ্গি, তাঁর বিদেশনীতি, তাঁর রাজনৈতিক উত্তরসূরী, ইন্দিরা গাঁধীর গরিবি হঠাও ও দেশের প্রথম তিন সাধারণ নির্বাচন সংক্রান্ত প্রসঙ্গ। বাদ পড়েছে মণ্ডল কমিশন রিপোর্ট, পঞ্জাব সঙ্কট ও চুরাশির শিখ বিরোধী দাঙ্গা, অযোধ্যা বিতর্ক। বাদ পড়েছে গুজরাত দাঙ্গা, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাতিল করার প্রসঙ্গও।

এছাড়া ভারত ও ঠাণ্ডা যুদ্ধ, অর্থনীতি ও আদর্শে মার্কিন প্রভাব ও নানা চ্যালেঞ্জ, মাও জে দংয়ের পর চিনা অর্থনীতির উত্থান, দক্ষিণ এশিয়ার অশান্তি ও শান্তি প্রচেষ্টা, নিরস্ত্রীকরণ সংক্রান্ত তথ্য, উদারীকরণের ফল, উদারীকরণ বিরোধী আন্দোলন- এ সবও বাদ পড়েছে। ১৯৮৬-র জাতীয় শিক্ষানীতি, নারী সশক্তিকরণের চ্যাপটারও বাদ দেওয়া হয়েছে দ্বাদশের এডুকেশন পেপার থেকে। মনোরঞ্জন কাকাতি বলেছেন, বরাক উপত্যকা সহ অসমের কলা, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাছ থেকে সিলেবাস কমানোর ব্যাপারে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।

সোশিওলজিতে বাদ পড়েছে সমানাধিকারের জন্য নারী সংগ্রাম, সংখ্যালঘু অধিকার, দেশ গঠন, পঞ্চায়েতি রাজ ও ভূমি সংস্কার, আদিবাসী আন্দোলনের প্রসঙ্গ। ইতিহাসে মুঘল দরবার, মুঘল দরবারে জেসুইটদের আগমন, কৃষক, জমিদারদের পরিস্থিতি, মত পার্থক্য, সংঘর্ষ ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের প্রেক্ষিতে ইতিহাসের পুনর্গঠনের প্রসঙ্গ থাকছে না।

২০১৮-য় চালু হয়েছিল স্বদেশ অধ্যয়ন। সেখান থেকে ধর্মীয় ও ভাষাগত জনসংখ্যার পরিবর্তন, অসমে জনসংখ্যা বিস্ফোরণ, বিদেশি অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গ বাদ দেওয়া হয়েছে।