দুর্নীতি, বেকারত্ব নিয়ে, সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুনটা ধিকিধিকি জ্বলছিলই। তারমধ্য়েই, সরকারের সোশাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তই ঢেলেছে ঘি। সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে উত্তাল ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল। গণ -আন্দোলনের ক্ষোভ আছড়ে পড়েছে সেখানকার রাজপথে। কাঠমাণ্ডুর মাইতিঘরের রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন কমপক্ষে এক লক্ষ পড়ুয়া।  এর আগে ভারতের প্রতিবেশী দেশ  শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশও বিদ্রোহের আগুনে জ্বলেছিল। এবার নেপাল। বিদ্রোহের আগুনে জ্বলছে কাঠমাণ্ডু, আঁচ পড়েছে পার্শ্ববর্তী  এলাকাগুলিতে। এখন প্রশ্ন,  এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির প্রভাব কি ভারতেও পড়বে? কী বলছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্তা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা?                        

২৬টি সোশাল মিডিয়া প্ল্য়াটফর্মের ওপর সরকারের নিষেধাজ্ঞার জেরে উত্তাল হয়ে ওঠে নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডু! পথে নামে জেন জ়েড। প্রতিবাদের চাপে অবশেষে নিষেধাজ্ঞা তুলেও নিয়েছে সরকার। ANI সূত্রে খবর, ভারত নেপাল সীমান্ত জুড়ে জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট। Sashastra Seema Bal (SSB)-এর তরফে জানানো হয়েছে, সীমান্ত জুড়ে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। নজর রাখা হয়েছে পরিস্থিতির উপর।  কিন্তু হঠাৎ করে ওলি-সরকারের বিরুদ্ধে এই যে পথে নেমে বিক্ষোভ, রক্তপাত, প্রাণহানি, এসবের প্রভাব কি পড়বে ভারতেও?    

কী বলছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা?   

প্রতিবেশী দেশ নেপালের এই পরিস্থিতিতে সতর্ক ভারতও । তার কারণ ভারতে ঢোকার জন্য় কৌশলগতভাবে বিভিন্ন সময় নেপালকে ব্য়বহার করেছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলি! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অস্থিরতার সুযোগ যাতে তারা নিতে না পারে, সেক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে নয়াদিল্লিকে! ব্রিগেডিয়ার প্রণব ঘোষের মতে, 'গত কয়েক বছরের প্রশাসনিক ব্যর্থতা। সেইসঙ্গে সে-দেশে প্রচুর কাজের অভাব, এখন তো সোশাল মিডিয়া থেকেও অনেকের রোজগার হয়।  '                       

ভারতের স্বাধীনতার পর, ১৯৫০ সালে দুই দেশের মধ্যে মৈত্রী চুক্তি হলেও, ভারতের সঙ্গে নেপালের সম্পর্কে বিভিন্ন সময় ওঠা-নামা করেছে। নেপালের সরকার ভারতপন্থী নাকি চিনপন্থী? এই নিয়ে নানা সময় ক্ষোভ-বিক্ষোভ-বিতর্ক তৈরি হয়েছে ।  নানা প্রকল্পে সহযোগিতা করে ও বিপুল ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে নেপালকে কাছে টানার চেষ্টা চালিয়ে গেছে শি জিনপিংয়ের সরকার। ভারতের সঙ্গে নেপালের সীমান্ত দেড় হাজার কিলোমিটারের কিছু বেশি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে যেখানে কোনও কাঁটাতার নেই। দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করতে কোনও পাসপোর্ট-ভিসারও প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বর্তমানে উত্তাল পরিস্থিতিতে কাঠমাণ্ডুর পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে ভারত।