ছাত্র-যুব বিদ্রোহে ফুঁসছে নেপাল। প্রতিবাদ প্রশমিত করতে লাঠচার্জ থেকে গুলিচালনা, সবই হয়েছে। রাজপথে লুটিয়ে পড়েছে প্রতিবাদীরা। ইতিমধ্যেই কমপক্ষে ২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহতের সংখ্যা চার শতাধিক। জেন Z-র প্রবল বিক্ষোভে পিছু হঠেছে নেপালের KP শর্মা ওলির সরকার। তুলে নেওয়া হয়েছে সোশাল মিডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পর চাপের মুখে পদত্যাগ করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীও। এই পরিস্থিতিতে প্রমাদ গুণছে ভারত-নেপাল সীমান্ত। শ্রীলঙ্কা - বাংলাদেশের পর আরেক প্রতিবেশী দেশও অশান্ত। এই পরিস্থিতির প্রভাব কি পড়বে ভারতেও ? এই আশঙ্কার মধ্যে প্রভাব পড়া শুরু হল বাংলার শিলিগুড়িতে।
অগ্নিগর্ভ নেপালে সোমবারই এক ভারতীয় ট্রাক চালক গুলিবিদ্ধ হন। এই ট্রাক ফেলে এপারে পালিয়ে এসেছেন অন্য চালকরা। শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কিতে ৩ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ভারত-নেপাল সীমান্ত। ওপারে কাঁকরভিটা, বীরতা মোড়ে জ্বলছে বিক্ষোভের আগুন। তার প্রভাব এবার পড়ল এপারে।
এপারে উত্তরবঙ্গের সীমান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে শ’য়ে শ’য়ে ট্রাক। কবে খুলবে সীমান্ত, তার অপেক্ষায় ট্রাক চালকরা। প্রভাব পড়েছে পানিট্যাঙ্কি এলাকার অর্থনীতিতে। সীমান্ত লাগোয়া এলাকার ভারতীয় ব্যবসায়ীরা নেপালের ওপর নির্ভরশীল। দোকানপাট বন্ধ, মার খাচ্ছে ব্যবসা।
মঙ্গলবার কাঠমাণ্ডুর কালাঙ্কি এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। একদিকে চলছে জনতার প্রতিবাদ, আরেকদিকে চলছে পুলিশের রুটমার্চ, মাইকে প্রচার। নেপালের বীরগঞ্জে আইনমন্ত্রী অজয় চৌরাসিয়ার বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। কাঠমান্ডুতে কার্ফু প্রত্যাহারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফের অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারি করাহয়েছে।
অগ্নিগর্ভ নেপালের পরিস্থিতি কি বাংলাদেশের মত?
বীরগঞ্জে আইনমন্ত্রী অজয় চৌরাসিয়ার বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেলের বাড়ির দখল নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। ললিতপুরে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুঙ্গের বাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাইসেপতিতে পদত্যাগী উপ প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পৌডেলের বাসভবন লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। পদত্যাগী প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। ভাইসেপতিতে নেপাল রাষ্ট্র ব্যাঙ্কের গভর্নর বিশ্ব পৌডেলের বাড়িতেও চলে পাথরবৃষ্টি। খুমালতারে নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী CPN (মাওবাদী) নেতা পুষ্পকমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ডর বাসভবন লক্ষ্য করেও পাথর ছোড়ে আন্দোলনকারীরা। এই পরিস্থিতিতে অনেকেরই মনে পড়ছে ২০২৪ এ বাংলাদেশের জুলাই-অগাস্ট মাসের পরিস্থিতির কথা।