কাঠমান্ডু: সোশাল মিডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরেও দুর্নীতি, বেকারত্বের প্রতিবাদে নেপালে আন্দোলন জারি। ছাত্র-যুব বিদ্রোহে ফুঁসছে প্রতিবেশী দেশ। ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার নতুন করে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। সোশ্যাল মিডিয়ার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও বিক্ষোভ আর প্রশমিত করা যাচ্ছে না। চারিদিক থেকে একটাই স্লোগান, ওলি চোর, দেশ ছোড় ! ইতিমধ্যেই পুলিশের গুলিতে রক্তবন্যা বয়েছে। একের পর এক প্রতিবাদীর প্রাণ গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্ষোভের আগুন এতটাই তীব্র, যা প্রশমিত করাই যাচ্ছে না। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী ওলি নাকি এবার দেশ ছাড়তে পারেন। তিনি নাকি চিকিৎসার 'অজুহাতে' দুবাই যাওয়ার তোড়জোড়ও শুরু করেছেন। শোনা গিয়েছে, নেপালের প্রধানমন্ত্রীকে নাকি পদত্যাগ করতে বললেন সেনা প্রধান । তার আগে অবশ্য বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বার্তাও দেন তিনি। কী লিখেছেন তিনি সেখানে?
ওলির আবেদন, 'গতকাল রাজধানী এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত বিক্ষোভ এবং পরবর্তী ঘটনাবলী দেখে আমি মর্মাহত। আমরা বিশ্বাস করি যে কোনও ধরনের হিংসা দেশের জন্য হিতকর নয়। শান্তিপূর্ণভাবে ও সংলাপের মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করাই আমাদের গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে, একটি অর্থপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। এজন্য আমি আজ সন্ধ্যা ৬ টায় একটি সর্বদলীয় সভাও আহ্বান করেছি। এই কঠিন পরিস্থিতিতে সকল ভাই ও বোনদের শান্ত থাকার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।'
এদিকে একাধিক মন্ত্রীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে সেখানে। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনেও হামলা চালিয়েছে আন্দোলনকারীরা। রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত বাসভবনও আন্দোলনকারীদের দখলে চলে গিয়েছে। রেহাই পায়নি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বাড়িও। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক উড়ান।
নেপালে 'গণবিদ্রোহ'এর জেরে এখনও পর্যন্ত ১০ মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগীদের মধ্যে রয়েছেন উপ প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, জল সরবরাহমন্ত্রী। নেপালি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই আবহেই চিকিৎসার অজুহাতে দুবাই যাওয়ার তোড়জোড় করছেন প্রধানমন্ত্রী KP শর্মা ওলি। মন্ত্রীদের পদত্যাগ না করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ সন্ধে ৬টায় সর্বদলীয় বৈঠকও ডেকেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলছে ইটবৃষ্টি। এরপর পরিস্থিতি কোনদিকে গড়ায় সেটাই দেখার।