সন্দীপ সরকার, কলকাতা : নেপালের আঁচ ভারতে। বন্ধ বিহারের রক্সৌল সীমান্ত। ওপারে নেপালের বীরগঞ্জ। সকাল থেকে দলে দলে ফিরছেন ভারতীয় পর্যটকরা। কেউ হেঁটে, কেউ বাসে, কেউ আবার ঘোড়ার গাড়ি করে ভাড়া করে দেশে ফিরে আসছেন। ভারতের দিক থেকে নেপালে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আপাতত ছেদ পড়েছে ভারত - নেপাল বাণিজ্যতেও। এই পরিস্থিতিতে যাঁরা দেশে ফিরছেন, তাঁরাও আতঙ্কের ঘোর কাটাতে পারছেন না। অগ্নিগর্ভ নেপালে কারও কারও অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। 

Continues below advertisement

কাজের সূত্রে নেপালে যাতায়াত করেন বাংলার অনেকেরই। কিন্তু এমন অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে হবে ভাবেননি। নেপালে উন্মত্ত জনতার রোষের মুখে পড়ে গিয়েছিলেন কলকাতার ৩ বাসিন্দা। অফিসের কাজে দিন সাতেক আগে নেপালে যান সায়েন্স সিটির বাসিন্দা দিলীপ মণ্ডল, বউবাজারের বাসিন্দা কৃষ্ণপ্রসাদঅধিকারী এবং বেহালার বাসিন্দা পরেশ মল্লিক।

২ দিন আগে থেকেই অশান্তির আঁচ পেয়েছিলেন । ভাবেননি যে এভাবে নেপালের মানুষের রোষ এসে পড়তে পারে তাঁদের উপর। আগেই সতর্ক করেছিলেন হোটেল মালিক। কিন্তু কাজ শেষ না হওয়ায় অপেক্ষা করে গিয়েছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার ভয়ানক অভিজ্ঞতা হয় তাঁদের ।  বীরগঞ্জে গাড়ি পৌঁছতেই ঘিরে ধরে উত্তেজিত জনতা।  গাড়িতে তখন বসে তাঁরা। দাবি, তাঁদের সমেতই গাড়িটি চাগিয়ে তোলে একদল লোক। তারপর নিজেদের মধ্যেই বলে, এবার গাড়িটা আগুনে ফেলে দিতে হবে। তখন তাঁদের রক্ষা করেন নেপালি ড্রাইভারই। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে রেহাই পান। অন্য রাস্তা দিয়ে গাড়ি বের করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেন। এরপর বীরগঞ্জ থেকে হেঁটে বুধবার সকালে পৌঁছেছেন বিহারের রক্সৌল সীমান্তে। ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিয়ে মিথিলা এক্সপ্রেসে চড়ে ফিরছেন কলকাতায়। 

Continues below advertisement

আতঙ্ক নিয়ে ফিরলেন অবিনাশ নায়েক অন্যদিকে, অফিসের কাজে নেপালে যাওয়া বাঘাযতীনের বাসিন্দা অবিনাশ নায়েকের অভিজ্ঞতাও ভাল নয় । একটা রাত কোনওরকমে বীরগঞ্জে কাটিয়েছেন। অফিসের কাজে কাঠমাণ্ডুতে যাওয়ার কথা থাকলেও আগেভাগেই ফিরে এসেছেন দেশে। পরিস্থিতি এমনই যে, গাড়ির অপেক্ষায় না থেকে হেঁটে বীরগঞ্জ থেকে চলে এসেছেন রক্সৌল সীমান্তে। দেশে পা রেখে স্বস্তি পেয়েছেন। 

নেপালেই মেডিক্যাল কলেজে আটকে ১০০ জন ভারতীয় পড়ুয়া

এদিকে নেপালে আটকে পড়েছেন বঙ্গতনয়া বিনিতা মান্না। খড়গপুরে বিনিতা বিরাটনগর মেডিক্যাল কলেজের MBBS দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তাঁর দাবি, ক্যাম্পাসে আটকে রয়েছেন প্রায় ১০০ জন ভারতীয় পড়ুয়া। সোশাল মিডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও, ইন্টারনেট ব্যবহারে সমস্যা হচ্ছে। বেশিরভাগ সময় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। এই অবস্থায় দ্রুত দেশে ফিরতে ভারতীয় দূতাবাসের সহযোগিতা চান নেপালের ওই মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা।