Netaji birth Anniversary 2021: স্বাধীন দেশে পা রাখতে পেরেছিলেন? নাকি শেষ জীবন কাটে সাইবেরিয়ায় পাথর ভেঙে? ১২৪তম জন্মতিথিতেও অমীমাংসিত নেতাজি রহস্য
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
22 Jan 2021 05:18 PM (IST)
Netaji Birth Anniversary Celebration: বিচারপতি মুখোপাধ্যায় তদন্ত কমিশন ২০০৫ সালে জানিয়ে দেয়, ১৯৮৫-এর ১৮ অগাস্ট তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনার কোনও প্রমাণ মেলেনি।
NEXT
PREV
কলকাতা: নেতাজি বলেছিলেন, কোনও লক্ষ্যে পৌঁছতে যদি তুমি নিজের আশা আকাঙ্খা বিসর্জন দিয়ে প্রাণত্যাগেও প্রস্তুত থাক, তবে তুমি অজেয় হয়ে উঠবে। যদি রক্তে মাংসে গড়া এই দেহ শেষও হয়ে যায়, তোমার লক্ষ্য আর চিন্তাধারা বয়ে চলবে যুগ থেকে যুগান্তরে।
এখনও গোটা বিশ্বের সামনে এক বিশাল মহীরূহ হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। যে কোনও দেশনায়কের কঠিন কোনও সিদ্ধান্তে এখনও আমরা তুলনা করতে বসি, নেতাজি থাকলে এই পরিস্থিতিতে কী করতেন। ২৩ জানুয়ারি শুধু গর্ববোধ নয়, সীমাহীন যন্ত্রণা নিয়ে আসে। ঠিক কী হয়েছিল নেতাজির সঙ্গে? সত্যিই কি তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় তিনি প্রয়াত হন? নাকি তার পরেও বেঁচে ছিলেন কিন্তু ফিরতে পারেননি সেই দেশে যার স্বাধীনতার জন্য তিনি প্রাণপাত করেছিলেন? অথবা ফিরে এসেছিলেন, নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে পারেননি? কী সেই অজানা সঙ্কট যা আমরা জানতে পারলাম না?
২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্টেট আর্কাইভে থাকা নেতাজি সম্পর্কিত সব ‘গোপন’ ফাইল প্রকাশ করে। ১৯৫৪ থেকে ১৯৭৪-এর মধ্যে এই ফাইলগুলিতে দেখা যায় নেতাজির অন্তর্ধান নিয়ে ১০টি তদন্ত হয়েছিল। সব কটি তদন্তই দাবি করে, ১৯৪৫-এর ১৮ অগাস্ট তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন একাধিক নেতাজি গবেষক। বিচারপতি মুখোপাধ্যায় তদন্ত কমিশন ২০০৫ সালে জানিয়ে দেয়, ১৯৮৫-এর ১৮ অগাস্ট তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনার কোনও প্রমাণ মেলেনি। ২০০৩ সালের মার্চে তাইপের মেয়র এক ভারতীয় সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, তাইপে সিটি আর্কাইভে ওইদিন তাইপেতে কোনও বিমান দুর্ঘটনার কোনও উল্লেখ নেই।
নেতাজির প্রয়াণ ও শেষকৃত্যের দুজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন- হাবিবুর রহমান ও দোভাষী জুইচি নাকামুরা। ১৯৫৬ সালে গঠিত শাহনওয়াজ কমিটির সামনে তাঁরা বলেন, ১৯৪৫-এর ২০ অগাস্ট নেতাজির শেষকৃত্য হয়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ইয়োসিমি ২০ তারিখ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় দেহটি। হাবিবুর দাবি করেন, পরদিন তিনি দেহভস্ম সংগ্রহ করেন।
নেতাজির ডেথ সার্টিফিকেট কখনও উদ্ধার হয়নি। তাইহোকু পুরসভার ক্রিমেশন রেজিস্টারের রেকর্ড বলছে, ১৯-২১ অগাস্টের মধ্যে ৪ জন পুরুষের শেষকৃত্য হয়। কিন্তু তাঁদের মধ্যে নেতাজি যে ছিলেন তার কোনও সুস্পষ্ট প্রমাণ নেই।
নেতাজির বিরাট গুণগ্রাহী ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী। জনৈক ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞের তৈরি ফরেনসিক ফেস-ম্যাপিং রিপোর্ট বলে, ১৯৬৬ পর্যন্ত নেতাজি বেঁচে ছিলেন। ওই বিশেষজ্ঞের মত অনুযায়ী তাসখন্দে লালবাহাদুর শাস্ত্রীর একটি ছবিতে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকজনের মধ্যে একজনের মুখের সঙ্গে নেতাজির মুখের অস্বাভাবিক সাদৃশ্য রয়েছে। তাসখন্দ আলোচনার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শাস্ত্রী তাঁর পরিবারকে ফোন করেন, বলেন, তাঁর সঙ্গে এমন একজনের দেখা হয়েছে যিনি অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ।
নরেন্দ্রনাথ সিন্দকর নামে এক লেখক একটি এফিডেভিট ফাইল করেন। তাতে বলা হয়, বিপ্লবী বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে নিখিল চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী তথাকথিত তাইহোকু দুর্ঘটনার ২৩ বছর পর সাইবেরিয়ার একটি শহরে নেতাজির দেখা পান। বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে স্তালিন সরকার ১৯৩৭ সালে হত্যা করে। এফিডেভিটে বলা হয়েছে, নেতাজি ভারতে ফিরতে চাননি, তাঁর মনে হয়েছিল, দেশে ফিরলে তাঁকে যুদ্ধাপরাধী ঘোষণা করা হবে। ফ্রান্সের সিক্রেট সার্ভিস রিপোর্টও বলছে নেতাজি ১৯৪৭-এও বেঁচে ছিলেন। প্যারিসের ঐতিহাসিক জেবিপি মোরে ফ্রেঞ্চ সিক্রেট সার্ভিসের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে জানিয়েছিলেন এ কথা। এতে পরিষ্কার বলা হয়, নেতাজি ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগের প্রাক্তন প্রধান ছিলেন, জাপানি সংগঠন হিকারি কিহানের সদস্যও ছিলেন তিনি।
আবার অনেকে বিশ্বাস করেন, ভারতে ফিরে এসেছিলেন নেতাজি। অযোধ্যায় ফৈজাবাদে সন্ন্যাসীর জীবন কাটিয়েছিলেন। পরিচিত ছিলেন গুমনামী বাবা নামে, ১৯৮৫-তে তাঁর মৃত্যু হয়। ২০১৯-এ একটি বাংলা ছবিও মুক্তি পায় গুমনামি নামে। যদিও নেতাজির পরিবারের দাবি, গুমনামি বাবা জল্পনা পুরোপুরি মিথ্যে।
আবার অসংখ্য মানুষ বিশ্বাস করেন, ১৯৬৪-র ২৭ মে জওহরলাল নেহরুর অন্ত্যেষ্টি অনুষ্ঠানে নেতাজি উপস্থিত ছিলেন, তাঁর পরনে ছিল সাধুর পোশাক। অনেকের ধারণা, নেতাজি এই ছদ্মবেশ নিয়েছিলেন শত্রুদের চোখে ধুলো দিতে।
১০টি তদন্ত রিপোর্ট নেতাজির মৃত্যু ১৮ অগাস্ট, ১৯৪৫-এ ঘটেছিল বলে দাবি করলেও নেতাজি রহস্য দেশের সব থেকে বড় রাজনৈতিক হত্যা রহস্য হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে আছে। তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় সত্যিই তিনি প্রয়াত হয়েছিলেন কিনা জানা যায়নি, হয়তো যাবেও না কোনওদিন। কিন্তু নেতাজি প্রবলভাবে বেঁচে আছেন, বেঁচে রইবেন যুগে যুগে, ভারতীয়দের মনের মধ্যে।
কলকাতা: নেতাজি বলেছিলেন, কোনও লক্ষ্যে পৌঁছতে যদি তুমি নিজের আশা আকাঙ্খা বিসর্জন দিয়ে প্রাণত্যাগেও প্রস্তুত থাক, তবে তুমি অজেয় হয়ে উঠবে। যদি রক্তে মাংসে গড়া এই দেহ শেষও হয়ে যায়, তোমার লক্ষ্য আর চিন্তাধারা বয়ে চলবে যুগ থেকে যুগান্তরে।
এখনও গোটা বিশ্বের সামনে এক বিশাল মহীরূহ হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। যে কোনও দেশনায়কের কঠিন কোনও সিদ্ধান্তে এখনও আমরা তুলনা করতে বসি, নেতাজি থাকলে এই পরিস্থিতিতে কী করতেন। ২৩ জানুয়ারি শুধু গর্ববোধ নয়, সীমাহীন যন্ত্রণা নিয়ে আসে। ঠিক কী হয়েছিল নেতাজির সঙ্গে? সত্যিই কি তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় তিনি প্রয়াত হন? নাকি তার পরেও বেঁচে ছিলেন কিন্তু ফিরতে পারেননি সেই দেশে যার স্বাধীনতার জন্য তিনি প্রাণপাত করেছিলেন? অথবা ফিরে এসেছিলেন, নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে পারেননি? কী সেই অজানা সঙ্কট যা আমরা জানতে পারলাম না?
২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্টেট আর্কাইভে থাকা নেতাজি সম্পর্কিত সব ‘গোপন’ ফাইল প্রকাশ করে। ১৯৫৪ থেকে ১৯৭৪-এর মধ্যে এই ফাইলগুলিতে দেখা যায় নেতাজির অন্তর্ধান নিয়ে ১০টি তদন্ত হয়েছিল। সব কটি তদন্তই দাবি করে, ১৯৪৫-এর ১৮ অগাস্ট তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন একাধিক নেতাজি গবেষক। বিচারপতি মুখোপাধ্যায় তদন্ত কমিশন ২০০৫ সালে জানিয়ে দেয়, ১৯৮৫-এর ১৮ অগাস্ট তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনার কোনও প্রমাণ মেলেনি। ২০০৩ সালের মার্চে তাইপের মেয়র এক ভারতীয় সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, তাইপে সিটি আর্কাইভে ওইদিন তাইপেতে কোনও বিমান দুর্ঘটনার কোনও উল্লেখ নেই।
নেতাজির প্রয়াণ ও শেষকৃত্যের দুজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন- হাবিবুর রহমান ও দোভাষী জুইচি নাকামুরা। ১৯৫৬ সালে গঠিত শাহনওয়াজ কমিটির সামনে তাঁরা বলেন, ১৯৪৫-এর ২০ অগাস্ট নেতাজির শেষকৃত্য হয়। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ইয়োসিমি ২০ তারিখ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় দেহটি। হাবিবুর দাবি করেন, পরদিন তিনি দেহভস্ম সংগ্রহ করেন।
নেতাজির ডেথ সার্টিফিকেট কখনও উদ্ধার হয়নি। তাইহোকু পুরসভার ক্রিমেশন রেজিস্টারের রেকর্ড বলছে, ১৯-২১ অগাস্টের মধ্যে ৪ জন পুরুষের শেষকৃত্য হয়। কিন্তু তাঁদের মধ্যে নেতাজি যে ছিলেন তার কোনও সুস্পষ্ট প্রমাণ নেই।
নেতাজির বিরাট গুণগ্রাহী ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী। জনৈক ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞের তৈরি ফরেনসিক ফেস-ম্যাপিং রিপোর্ট বলে, ১৯৬৬ পর্যন্ত নেতাজি বেঁচে ছিলেন। ওই বিশেষজ্ঞের মত অনুযায়ী তাসখন্দে লালবাহাদুর শাস্ত্রীর একটি ছবিতে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকজনের মধ্যে একজনের মুখের সঙ্গে নেতাজির মুখের অস্বাভাবিক সাদৃশ্য রয়েছে। তাসখন্দ আলোচনার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শাস্ত্রী তাঁর পরিবারকে ফোন করেন, বলেন, তাঁর সঙ্গে এমন একজনের দেখা হয়েছে যিনি অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ।
নরেন্দ্রনাথ সিন্দকর নামে এক লেখক একটি এফিডেভিট ফাইল করেন। তাতে বলা হয়, বিপ্লবী বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে নিখিল চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী তথাকথিত তাইহোকু দুর্ঘটনার ২৩ বছর পর সাইবেরিয়ার একটি শহরে নেতাজির দেখা পান। বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে স্তালিন সরকার ১৯৩৭ সালে হত্যা করে। এফিডেভিটে বলা হয়েছে, নেতাজি ভারতে ফিরতে চাননি, তাঁর মনে হয়েছিল, দেশে ফিরলে তাঁকে যুদ্ধাপরাধী ঘোষণা করা হবে। ফ্রান্সের সিক্রেট সার্ভিস রিপোর্টও বলছে নেতাজি ১৯৪৭-এও বেঁচে ছিলেন। প্যারিসের ঐতিহাসিক জেবিপি মোরে ফ্রেঞ্চ সিক্রেট সার্ভিসের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে জানিয়েছিলেন এ কথা। এতে পরিষ্কার বলা হয়, নেতাজি ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগের প্রাক্তন প্রধান ছিলেন, জাপানি সংগঠন হিকারি কিহানের সদস্যও ছিলেন তিনি।
আবার অনেকে বিশ্বাস করেন, ভারতে ফিরে এসেছিলেন নেতাজি। অযোধ্যায় ফৈজাবাদে সন্ন্যাসীর জীবন কাটিয়েছিলেন। পরিচিত ছিলেন গুমনামী বাবা নামে, ১৯৮৫-তে তাঁর মৃত্যু হয়। ২০১৯-এ একটি বাংলা ছবিও মুক্তি পায় গুমনামি নামে। যদিও নেতাজির পরিবারের দাবি, গুমনামি বাবা জল্পনা পুরোপুরি মিথ্যে।
আবার অসংখ্য মানুষ বিশ্বাস করেন, ১৯৬৪-র ২৭ মে জওহরলাল নেহরুর অন্ত্যেষ্টি অনুষ্ঠানে নেতাজি উপস্থিত ছিলেন, তাঁর পরনে ছিল সাধুর পোশাক। অনেকের ধারণা, নেতাজি এই ছদ্মবেশ নিয়েছিলেন শত্রুদের চোখে ধুলো দিতে।
১০টি তদন্ত রিপোর্ট নেতাজির মৃত্যু ১৮ অগাস্ট, ১৯৪৫-এ ঘটেছিল বলে দাবি করলেও নেতাজি রহস্য দেশের সব থেকে বড় রাজনৈতিক হত্যা রহস্য হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে আছে। তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় সত্যিই তিনি প্রয়াত হয়েছিলেন কিনা জানা যায়নি, হয়তো যাবেও না কোনওদিন। কিন্তু নেতাজি প্রবলভাবে বেঁচে আছেন, বেঁচে রইবেন যুগে যুগে, ভারতীয়দের মনের মধ্যে।
খবর (news) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -