নয়াদিল্লি: সংসদে পাশ হয়ে গিয়েছে, সম্মতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতিও। এবার নয়া অপরাধ আইন কার্যকর হতে চলেছে দেশে। তবে এখনই নয়, লোকসভা নির্বাচন মিটে যাওয়ার পর, এ বছর ১ জুলাই দেশে নয়া অপরাধ আইন কার্যকর হবে। শনিবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই ঘোষণা করা হল। গত বছর ডিসেম্বরে নয়া অপরাধ আইন ছাড়পত্র পায়। এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে কার্যকর হবে সেটি। (New Criminal Laws)


নয়া ভারতীয় অপরাধ আইন কার্যকর হলে, তার অন্তর্ভুক্ত ভারতীয় ন্যায় (দ্বিতীয়) সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা (দ্বিতীয়) এবং ভারতীয় সাক্ষ্য (দ্বিতীয়) বিল ১৮৬০ সালের ইন্ডিয়ান পিনাল কোড, ১৮৭৩ সালের কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর এবং ১৮৭২ সালের ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্টের জায়গা নেবে। (Bharatiya Nyay Sanhita)


ঔপনিবেশিক শাসনের বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে এই পরিবর্তন প্রয়োজন ছিল বলে জানিয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে সংসদে বলতে শোনা যায়, "নয়া আইন ভারতীয়ত্ব, ভারতী সংবিধান এবং ভারতের মানুষের কল্যাণসাধনের জন্যই আনা হয়েছে। নয়া আইনে প্রযুক্তির ব্যবহারে জোর দেওয়া হয়েছে। তদন্তে ফরেন্সিক সায়েন্সের ব্যবহার ত্বরাণ্বিত হবে। আইনি প্রক্রিয়া এবং বিচার ব্যবস্থা এতে উপকৃত হবে।"


আরও পড়ুন: National Medical Commission: হস্টেল নিতে বাধ্য করা যাবে না ডাক্তারি পড়ুয়াদের, অন্যথায় কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি


সংসদে শাহ জানান, নয়া আইন কার্যকর হলে আগামী পাঁচ বছরে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে উন্নততর হয়ে উঠবে। খুঁটিনাটি সবকিছু এই তিন আইনের আওতায় আসায় সুবিধা হবে সবদিক থেকে।


সংসদে উত্থাপিত হওয়ার পর থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই পরিবর্তনের বিরোধিতা করে আসছিল বিরোধী শিবির। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে বিরোধী শিবিরের অন্যদের তরফে সেই নিয়ে বার বার চিঠিও দেওয়া হয়েছে। বিরোধীদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করে, কারও মতামত গ্রাহ্য না করে বিলগুলি পাস করানোর প্রচেষ্টায় মোদি সরকার রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে তাতে। এমনকি দেশের আইন বিশারদ থেকে বিচারপতি, আমলা, মানবাধিকার সংস্থা, কারও কোনও মতামতের ধার ধারা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, নয়া বিল এনে মোদি সরকার ঘুরপথে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন ফেরাতে চাইছে, দেশের আইনশৃঙ্খলার খোলনলচে বদলে দিতে চাইছে বলেও বিরোধীরা দাবি করেন।


সংসদে আলোচনার সময় বিরোধীদের সেই আশঙ্কা সত্যি হয়। কারণ শাহকে বলতে শোনা যায়, "আগে রাজদ্রোহ আইন ছিল। আমরা সেটিকে দেশদ্রোহ আইন করলাম পাল্টে। কারণ রাজদ্রোহ বলতে ব্যক্তিবিশেষের বিরোধিতা বোঝায়, আমরা দেশকে যোগ করলাম। দাসত্বের চিহ্ন মুছে দিলেন নরেন্দ্র মোদি। যাঁরা দেশের ক্ষতি করবেন, কেউ নিস্তার পাবেন না।" কেন্দ্র সরকার জানিয়ছে, আগে CrPC-তে ৪৮৪টি ধারা ছিল, তা বাড়িয়ে ৫৩১ করা হয়েছে। ১৭৭টি ধারায় পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে, যোগ করা হয়েছে ৯টি নতুন অনুচ্ছেদ। ৩৯টি উপধারাও যুক্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আনা হয়েছে ৪৪টি নতুন ধারাও।