নয়াদিল্লি: এমনিতে নবীন প্রজন্মের মধ্যে বিয়ের তাগিদ কমেছে। সংসার, সন্তানের পরিবর্তে বর্তমানে মানুষ একাকী থাকতে পছন্দ করেন বলে উঠে এসেছে একাধিক সমীক্ষায়। সেই আবহে জাপানে 'Friendship Marriage'-এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। এই ধরনের পরিণয়ে চারহাত এক হলেও, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের সমীকরণ একেবারেই আলাদা। এই বিয়েতে না আছে প্রেম, না যৌনতা। আছে শুধু নিখাদ বন্ধুত্ব। (Friendship Marriages in Japan)


পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালে পঞ্চদশ বারের জন্য জাপানের জনসংখ্যায় পতন দেখা গিয়েছে। একদিকে যখন জন্মহার কমছে, বাড়ছে প্রবীণ সংখ্যা, সেই সময়ই জনসংখ্যা প্রায় ৫ লক্ষ কমে গিয়েছে একধাক্কায়। পাশাপাশি, তিনের দশকের পর ২০২৩ সালেই প্রথম দেশে মোট বিয়ের সংখ্যা ৫ লক্ষের নীচে নেমে গিয়েছে। যাও বা বিয়ে হচ্ছে, তার মধ্যে 'Friendship Marriage'-এর হার উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে গিয়েছে। (Japan Population)


'Friendship Marriage' আসলে কী? এই ধরনের বিয়ে প্রেমনির্ভর হয় না। বরং পারস্পরিক সাহচর্যই হয় বিয়ের ভিত্তি। বন্ধুত্ব নির্ভর বিয়ে হলেও, এর অর্থ প্রিয়বন্ধুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে বাঁধা পড়া নয়। বরং একই মূল্যবোধে বিশ্বাসী, একই মানসিকতার মানুষের সঙ্গে একছাদের নীচে জীবন কাটানোই লক্ষ্য। এক্ষেত্রে সাংসারিক দায়-দায়িত্ব স্বামী-স্ত্রী নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন। বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে অন্য কারও প্রেমেও পড়তে পারেন। আবার চাইলে নিজেরাও সন্তানধারণ করতে পারেন। সন্তানধারণের ক্ষেত্রে সাধারণত IVF-এর রাস্তায় হাঁটেন এই দম্পতিরা।


২০১৫ সাল থেকে এমন ৫০০-রও বেশি 'Friendship Marriage'-এর পরিসংখ্যান সামনে এসেছে। মোটামুটি ভাবে ৩০-৩২ বছর বয়স যাঁদের, উচ্চশিক্ষিত এবং অর্থনৈতিক ভাবে স্বচ্ছল যাঁরা, তাঁরাই 'Friendship Marriage'-এর দিকে ঝুঁকছেন। এর সপক্ষে যে যুক্তি উঠে এসেছে, তা হল, সেভাবে যৌন চাহিদা নেই যাঁদের, তাঁরা সংসারে প্রবেশের এই রাস্তা বেছে নিচ্ছেন। আবার জাপানে যেহেতু সমকামী বিবাহ বৈধ নয়, সমকামীরাও তাই এমন বিয়ের দিকে ঝুঁকছেন। পরিবার এবং সমাজের চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার রাস্তা হিসেবেও 'Friendship Marriage'-কে বেছে নিচ্ছেন অনেকে।


পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালের প্রথম ছ'মাসে জাপানে একাকী বসকারী ৩৭ হাজার ২২৭ জন মারা গিয়েছেন। এতে একাকীত্বের সমস্যা আরও প্রকট হয়ে ধরা দিয়েছে। শুধুমাত্র সাহচর্য পাওয়ার লক্ষ্যেও 'Friendship Marriage' বেছে নিচ্ছেন অনেকে। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পেতেও এই সম্পর্ক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।