কলকাতা: সাদা উঁচু উঁচু বিল্ডিং। তার মাঝে সবুজ কার্পেটের মতো ঘাস। ভর দুপুরে এক দিকে রাইফেল হাতে দৌড়াচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা। অন্যদিকে, নাইন এমএম পিস্তল নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে দুই যুবক। যা দেখে বোঝার উপায় নেই বাস্তব না কি সিনেমা! যে কোনও ক্রাইম থ্রিলারকেও হার মানাতে পারে এই দৃশ্য।


নিউটাউনের আবাসনে এনকাউন্টারে মৃত দুই দুষ্কৃতী। পঞ্জাবের গ্যাংস্টারদের নাম জসসি খাড়ার এবং জয়পাল ভুল্লার। যাদের ইতিহাস জানলে চোখ কপালে ওঠার মতো। পুলিশ সূত্রে খবর, ২২ মে থেকে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে ভাড়ায় থাকছিল দুষ্কৃতীরা। ১৫ মে লুধিয়ানায় অস্ত্র ছিনতাই করে ২ পুলিশকর্মীকে খুন করে বাংলায় পালিয়ে আসে ২ গ্যাংস্টার। খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত জয়পাল ও তার তিন শাগরেদের মাথায় দাম ঘোষণা করা হয় ১৯ লক্ষ টাকা।  এরমধ্যে শুধু জয়পাল ভুল্লারেরই মাথার দাম পুলিশ ঘোষণা করে ১০ লক্ষ টাকা।


জয়পাল ভুল্লারের বাবা ছিলেন পঞ্জাবের পুলিশের প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর। ফিরোজপুরের বাসিন্দা জয়পাল নিজে ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র। বরবারের মেধাবি ছাত্র হলেও ক্রমেই অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন তিনি। একাধিক খুন, ডাকাতি, তোলাবাজিতে অভিযুক্ত গ্যাংস্টার জয়পাল। পাতিয়ালায় একটি ব্যাঙ্ক ডাকাতিতেও নাম জড়ায় জয়পালের। আরও একটি ব্যাঙ্ক থেকে ৩০ কেজি সোনা লুঠে অভিযুক্ত ছিল সে। ৪০টির বেশি অভিযোগ ছিল তার নামে। জানা গিয়েছে,  ২০১৬ সালে ভাটিন্দায় খুন হয় জয়পাল ভুল্লারের বন্ধু শের খুব্বা। বদলা নিতে হিমাচল প্রদেশে গিয়ে একজনকে খুন করে জয়পাল। নিহত জয়পাল সম্পর্কে এমনই তথ্য পুলিশের হাতে। পঞ্জাব পুলিশের থেকে খবর পেয়েই অভিযানে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ।


এসটিএফ এডিজি বিনীত গোয়েল বলেন, “আমরা অনেকদিন ধরেই এই দুষ্কৃতীদের খোঁজ করছিলাম। আজ আমাদের কাছে পাকা খবর আসে, ওরা ওখানে লুকিয়ে আছে। তখন আমরা দুষ্কৃতীদের ধরার জন্য অভিযান চালাই। আমরা যখন গ্রেফতার করতে যাই, তখন ওরা বাধা দেয় এবং গুলি চালাতে শুরু করে। এরপর আমরাও পাল্টা গুলি চালাই। গুলির লড়াইয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের একজন ইন্সপেক্টরের গুলি লেগেছে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৮৯ রাউন্ড গুলি এবং ৭ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।“