গুয়াহাটি: কাজিরাঙার জঙ্গলে নতুন সদস্য়ের আগমন। শনিবার বিশ্ব পশু দিবস ছিল। আর সেই দিনই জন্ম নিল একটি হস্তিশাবক, যার নাম রাখা হল মায়াবিনী। সদ্য প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী জুবিন গর্গের একটি গান ছিল ‘মায়াবিনী’। সেই অনুসারেই নামকরণ হয়েছে হস্তিশাবকটির। হস্তিশাবকের এমন নামকরণ সার্থক বলে মনে করছেন জুবিনের অনুরাগীরা। (Mayabini Elephant Calf in Kaziranga)
কাজিরাঙা ন্য়াশনাল পার্ক অ্যান্ড টাইগার রিজার্ভে গতকালই জন্ম নিয়েছে হস্তিশাবকটি। তার মায়ের নাম Kuwari, অসমিয়ায় কুঁৱৰী, যার অর্থ রাজকুমারী। Kuwari এমনিতে অত্যন্ত জনপ্রিয় কাজিরাঙায়। গত চার দশক ধরে কাজিরাঙাকে আলোকিত করে রেখেছে Kuwari. Kuwari-র কোল আলো করেই সম্প্রতি জন্ম নেয় মায়াবিনী। কয়েক বছর আগে পুত্রসন্তান গৃহরাজেরও জন্ম দেয় Kuwari. (Zubeen Garg Song Mayabini)
কাজিরাঙা টাইগার রিজার্ভের ডিরেক্টর সোনালি ঘোষ জানিয়েছেন, ১৯৮৬ সাল থেকে সেখানে রয়েছে Kuwari. কোহোরা সেন্ট্রাল রেঞ্জ থেকে ২০১৪ সালে ইস্টার্ন রেঞ্জের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাকে। তার মেয়ে মায়াবিনী একেবারে সুস্থ আছে। এই মুহূর্তে মায়াবিনীকে চোখে হারাচ্ছেন সকলেই।
অসমের পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারিই হস্তিশাবকের নাম মায়াবিনী রাখার কথা জানিয়েছেন সকলকে। তাঁর মতে, অভয়ারণ্যে নতুন জীবন, আশা এবং সম্প্রতীর প্রতীক মায়াবিনী। চন্দ্রমোহন সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘বিশ্ব পশু দিবসে খুশির খবর। কাজিরাঙার Kuwari সুস্থ মেয়ের জন্ম দিয়েছে। অত্যন্ত স্নেহ ও সদিচ্ছার বশবর্তী হয়ে তার নাম রাখা হয়েছে মায়াবিনী, যা কি না নতুন জীবন, আশা ও সম্প্রীতির প্রতীক’।
আর এই ঘোষণা হতেই আবেগ বাঁধ মানছে না জুবিনের অনুরাগীদের। ‘মায়াবিনী রাতের বুকুত’ নামে জুবিনের একটি গান অসম্ভব জনপ্রিয়। জুবিনের মৃত্য়ুর পর থেকে সেই গানের কিছু পঙক্তি ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, যা খানিকটা এরকম,
‘মায়াবিনী আমার চোখে
চেয়ে দেখো
দ্যাখো না চেয়ে
ভাঙা মনে আমারও আছে
কত আশা
ভেবো না আর বাঁধন তোমার
খুলে দিলাম আকাশ নীলে
ডানা মেলে দিও তোমার
ডাকে তোমায় নতুন জীবন
স্মৃতিগুলি কখনো
যদি মনে পড়ে যায়
পারবে কি ভুলতে
তুমি কখনো আমায়…’।
পাশাপাশি, কাজিরাঙা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তিন বছর পর সেখানে ফিরেছে পরিযায়ী পাখি স্টর্ক। শেষবার ২০২২ সালের আদমসুমারিতে শেষ বার দেখা গিয়েছিল। প্রথমবার ২০০৪ সালেই কাজিরাঙায় স্টর্কের দর্শন মেলে। তার পর দেখা মেলিছিল ২০০৫ সালে। ফলে আবারও কাজিরাঙায় তাদের প্রত্যাবর্তন ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে আপাতত সকলের নয়নের মণি মায়াবিনী।